Howrah Corporation

টানা সাত বছর ধরে পুরভোট হয় না হাওড়ায়, অভিষেকের বৈঠকে সেই প্রসঙ্গ, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিল ক্যামাক স্ট্রিট

পুর পরিষেবার ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি থাকে। তাঁরাই নাগরিকদের নিত্য সমস্যার সমাধান করেন। কিন্তু হাওড়ায় গত সাত বছর ধরে কোনও কাউন্সিলরই নেই! যার প্রভাব পড়ছে পুরসভার কাজে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:১৭
Share:

(বাঁ দিকে) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ছিল বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে সাংগঠনিক বৈঠক। কিন্তু হাওড়া সদরের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই বৈঠকে ফের উঠল হাওড়া পুরসভায় টানা সাত বছর ভোট না-হওয়ার প্রসঙ্গ। ভোট না-হওয়ার ফলে হাওড়া শহরে যে দুরবস্থা তৈরি হয়েছে, সেই প্রসঙ্গ আলোচনায় আসে অভিষেকের বৈঠকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, হাওড়ার নেতাদের অভিষেক আশ্বস্ত করেছেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলবেন।

Advertisement

২০১৮ সাল থেকে হাওড়া পুরনিগমের ভোট বকেয়া রয়েছে। হাওড়া পুরসভায় শেষ ভোট হয়েছিল ১২ বছর আগে ২০১৩ সালে। হাওড়ার সঙ্গে বালি পুরসভাকে সংযুক্ত করেছিল রাজ্য সরকার। সেই সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছিল বিধানসভায়। কিন্তু বিলে সই করেননি তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তার পর আবার হাওড়া থেকে বালিকে পৃথক করারও বিল পাশ হয়েছে। কিন্তু তা-ও নানাবিধ জটে আটকে রয়েছে।

পুর পরিষেবার ক্ষেত্রে কাউন্সিলরদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাঁরাই নাগরিকদের নিত্য সমস্যার সমাধান করেন। কিন্তু হাওড়ায় গত সাত বছর ধরে কোনও কাউন্সিলরই নেই! যার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ছে পুরসভার কাজকর্মে। গত মার্চে বেলগাছিয়া ভাগাড়ে বিপর্যয়ের ঘটনা হাওড়ায় স্থানীয় স্তরে ‘প্রশাসনিক শূন্যতা’ বেআব্রু করে দিয়েছিল। সম্প্রতি বালি পুরসভায় নতুন প্রশাসক নিয়োগ করেছে রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। বালির বিধায়ক তথা চিকিৎসক রানা চট্টোপাধ্যায়কে সেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তা নিয়েও তৃণমূলের একাংশের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। হাওড়ার তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার বক্তব্য, ‘‘ভোট না-হওয়ার কারণে শহরের কী অবস্থা তা আমরা জানি। এর নেতিবাচক প্রভাবও আছে জনমানসে। বিধানসভা ভোটের আগে যা আমাদের কাছে বাড়তি বিড়ম্বনার।’’

Advertisement

তৃণমূল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে অভিষেক হাওড়ার কয়েকটি বিধানসভার কথা উল্লেখ করে বলেছেন, ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের তুলনায় ২০২৪ সালের লোকসভায় ব্যবধান কেন কমল, সেই কারণ খুঁজে এখনই মেরামতির কাজ করতে হবে। সেই তালিকায় রয়েছে দুই মন্ত্রী মনোজ তিওয়ারির কেন্দ্র শিবপুর এবং অরূপ রায়ের কেন্দ্র মধ্য হাওড়া। আবার উত্তর হাওড়া এবং বালির নেতৃত্বকে ‘সতর্ক’ করা হয়েছে গত বিধানসভা ভোটে সামান্য ব্যবধানে জয় নিয়েও। উল্লেখ্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে উত্তর হাওড়ায় তৃণমূল জিতেছিল সাড়ে ৫ হাজার ভোটে। বালিতে ব্যবধান ছিল ৬ হাজার। যদিও হাওড়ার তৃণমূল নেতা কৈলাস মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘আমাদের ৮টি বিধানসভাতেই ‘লিড’ আছে। সেই ‘মার্জিন’ আরও বাড়বে।’’

তৃণমূলের হাওড়া সদর সাংগঠনিক জেলায় মোট ৮টি বিধানসভা রয়েছে। সবক’টিই তৃণমূলের। লোকসভা ভোটের নিরিখেও ৮টিতে এগিয়ে তৃণমূল। তবে বিপুল সংখ্যক অবাঙালির বসবাস থাকায় বিজেপিরও জনভিত্তি রয়েছে হাওড়ায়। পদ্মশিবিরের অনেকে হাওড়া শহরকে তাঁদের ‘উর্বর জমি’ বলে মনে করেন। তৃ‌ণমূলের নেতারাও একান্ত আলোচনায় মানছেন, ভোটে এগিয়ে থাকলেও বিধানসভা ভোটে বেশ কয়েকটি আসনে সমানে-সমানে লড়াই হবে। শাসক তৃণমূলের নেতারা এ-ও মানছেন যে, বিধানসভা ভোটে পুর পরিষেবাকে ‘হাতিয়ার’ করবে বিরোধীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement