ঘরে ফাটল, ভাঙল পাঁচিল, ক্ষোভ চুঁচুড়া শহরে
Construction Work

আবাসনের ভিত খোঁড়ার সময় হেলে পড়ল বাড়ি

কাজের সময় হেলে পড়ল পাশের দোতলা বাড়ি। ঘরে ফাটল ধরল। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল পাঁচিল। বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় এলাকায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৩৩
Share:

এখানেই চলছিল খোঁড়াখুঁড়ি। চুঁচুড়ার খাদিনা মোড়ে। —নিজস্ব চিত্র।

আবাসন তৈরির জন্য ভিত খোঁড়া হচ্ছিল যন্ত্র দিয়ে। সেই কাজের সময় হেলে পড়ল পাশের দোতলা বাড়ি। ঘরে ফাটল ধরল। হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল পাঁচিল। বুধবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় এলাকায়। অভিযোগ, অবৈজ্ঞানিক ভাবে যেমন-তেমন করে মাটি খোঁড়ার জন্যই এই বিপত্তি। ওই বাড়িতে এক বৃদ্ধা তাঁর বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন মেয়েকে নিয়ে থাকেন। ঘটনার জেরে মাথা গোঁজার জন্য তাঁদের অন্যত্র সরতে হয়েছে।

Advertisement

সম্প্রতি কলকাতার গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ আবাসন ভেঙে ১২ জন মারা যান। ওই ঘটনায় রাজ্য জুড়ে তোলপাড় হয়। এ দিন চুঁচুড়ার এই ঘটনায় গার্ডেনরিচ-কাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে আনছেন স্থানীয় মানুষজন। তাঁদের বক্তব্য, বিপজ্জনক ভাবে, নিয়ম না মেনে ওই নির্মাণের ভিত তৈরি হচ্ছিল, এই ঘটনায় তা প্রমাণিত হল। না হলে পরবর্তী সময়ে আর একটি গার্ডেনরিচ-কাণ্ড হতে পারত!

ঘটনার পরে পরিস্থিতি দেখতে আসেন স্থানীয় বিধায়ক অসিত মজুমদার এবং হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার কর্তারা। আসে পুলিশ। আপাতত আবাসন নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির মালিক স্বপ্না দে সংশ্লিষ্ট প্রোমোটার অনিমেষ দাসের বিরুদ্ধে চুঁচুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

বিধায়ক বলেন, ‘‘কোনও বেআইনি নির্মাণ হতে দেওয়া যাবে না। এই ঘটনায় নিয়ম ভাঙার প্রমাণ মিললে প্রোমোটারের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।’’ পুর-পারিষদ (পূর্ত) সৌমিত্র ঘোষ বলেন, ‘‘দেখে যেটুকু বোঝা যাচ্ছে, আবাসন নির্মাণের কাজে কোনও খামতি আছে। কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারদের দল এসে বিষয়টি দেখবে। ক্ষতিগ্রস্ত বাড়িটি দেখে প্রোমোটারকে ক্ষতিপূরণের কথা বলা হবে। নিয়ম-বহির্ভূত কাজ হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

স্বপ্নার মেয়ে তাপসীর অভিযোগ, ‘‘বাড়ি হেলে গিয়েছে তো বটেই, বিভিন্ন অংশে ফাটলও ধরেছে। সীমানা পাঁচিল ভেঙে গিয়েছে। এত দিনের বাড়ি ছেড়ে দিতে হবে, কোনওদিন ভাবিনি! আমরা চাই, বাড়িটি আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দিন প্রোমোটার।’’

ঘটনাস্থলে প্রোমোটার অনিমেষের দেখা মেলেনি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। তাই প্রতিক্রিয়াও মেলেনি।

ঠিক কী হয়েছিল?

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দিন কয়েক ধরেই আবাসন তৈরির জন্য মাটি খোঁড়া হচ্ছিল। প্রতিবেশী দে বাড়ির পাঁচিল ঘেঁষে শাল-বল্লা পোঁতা হয়েছিল। মঙ্গলবার বেশ কয়েক ফুট গভীরে মাটি কাটার সময় পাঁচিলের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অভিযোগ, এরপরেও কাজ বন্ধ করা হয়নি। বুধবার সকালে ফের মাটি কাটার সময়েই ওই বিপত্তি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন