ঘরে-বাইরে অস্বস্তি অনেকের, সমস্যায় পড়তে চলেছে স্কুলও
Bengal SSC Recruitment Case

স্কুলে ঘণ্টা বাজানোর লোক থাকবে তো, প্রশ্ন

উচ্চ আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেল পর্য়ন্ত কোনও চিঠি বা নির্দেশিকা পায়নি স্কুলগুলি। স্কুলশিক্ষা দফতরেও ওই সংক্রান্ত কোনও মেল আসেনি বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শক (আরামবাগ) পলাশ রায়।

Advertisement

পীযূষ নন্দী , নুরুল আবসার

আরামবাগ ও উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:৫১
Share:

চাকরিহারাদের বিক্ষোভ। —ফাইল ছবি।

হাওড়া ও হুগলির অধিকাংশ সরকারি স্কুলই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী-সঙ্কটে ভুগছে। এর উপরে ২০১৬ সালের প্যানেল বাতিল সংক্রান্ত উচ্চ আদালতে রায় কার্যকর হলে গ্রামের দিকের বেশ কিছু স্কুল আরও বিপর্যস্ত হবে বলে মনে করছে দুই জেলারই প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সংগঠন।

Advertisement

সংগঠনের (অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেড মাস্টার্স অ্যান্ড হেড মিস্ট্রেস) রাজ্য সদস্য তথা আরামবাগের ডহরকুন্ডু শ্রীরামকৃষ্ণ হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রণবকুমার নায়েক বলেন, “স্কুলগুলিতে এমনিতেই প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক-শিক্ষিকা কম। তার মধ্যে এমন সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিলের যদি রায় হয়, কিছু স্কুল বিশেষ করে গ্রামেরগুলি প্রায় ফাঁকা হয়ে যাবে।” তিনি আরও বলেন, “দুর্নীতি হয়েছে কি না, তা আমাদের দেখার বা ভাবার কিছু নেই। আমাদের কাছে বড় বিষয়, স্কুলগুলিতে শিক্ষক চাই। এখন যাঁদের চাকরি গেল, তাঁদের মধ্যে যোগ্য থাকলে তো তাঁর প্রতি অবিচারই হয়েছে।’’

পুরশুড়ার ভাঙামোড় হাই স্কুলের তরফে উৎপল রক্ষিত বলেন, “আমাদের স্কুলে ২০১৬ সালের প্যানেলের চার জন শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। এখন তাঁরা চলে গেলে স্কুলে অসুবিধায় পড়বে। অযোগ্য এবং অপরাধীরা সবই শাস্তি পাক, কিন্তু নিরাপরাধেরা ভুগবেন কেন?”

Advertisement

উচ্চ আদালতের রায়কে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার বিকেল পর্য়ন্ত কোনও চিঠি বা নির্দেশিকা পায়নি স্কুলগুলি। স্কুলশিক্ষা দফতরেও ওই সংক্রান্ত কোনও মেল আসেনি বলে জানিয়েছেন মাধ্যমিক শিক্ষা দফতরের অতিরিক্ত জেলা পরিদর্শক (আরামবাগ) পলাশ রায়। মহকুমা মাধ্যমিক শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালের প্যানেল থেকে মহকুমার স্কুলগুলিতে শিক্ষিক-শিক্ষিকা, করণিক এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মী মিলিয়ে নিয়োগ হয়েছিল ৬৫-৭০ জন। তার মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষিকা ৪০-৪২ জন। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং জুনিয়র হাইস্কুল মিলিয়ে স্কুলের সংখ্যা ২৩১টি।

আমতা ২ ব্লকের ভাটোরা ইউনিয়ন হাই স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর অনুমোদিত পদ দু’টি। তার মধ্যে একটি পদ শূন্য। অন্য পদে যিনি কাজ করছেন, তাঁর চাকরি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে সোমবার হাই কোর্টের রায়ে। প্রধান শিক্ষক শেখ নইমুদ্দিন বলেন, ‘‘এখনও শিক্ষা দফতর থেকে কোনও নির্দেশ পাইনি। তবে ওই কর্মী অনেক কাজ করেন। তিনি বাদ পড়লে স্কুলের বহু কাজ চালানোর ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।’’

শ্যামপুরের শসাটি নহলা অবিনাশ হাই স্কুলে অনুমোদিত চতুর্থ শ্রেণির কর্মীর পদ চারটি। তার মধ্যে দু’টি পদ শূন্য। দু’জন কর্মী ছিলেন। হাই কোর্টের রায়ে এক জনের চাকরি সঙ্কটে। তিনি যদি বাদ পড়েন, স্কুলে ঘণ্টা বাজানোর কেউ থাকবে না বলে জানান প্রধান শিক্ষক রাজেশ দেঁড়িয়া। শুধু এই দু’টি স্কুলেই নয়। হাওড়া জেলার বহু স্কুলেই চতুর্থ শ্রেণির কর্মী চাকরি থেকে বাদ পড়ার তালিকায় আছেন। প্রতিটি স্কুলেই এই সমস্যা দেখা দেবে বলে জেলা স্কুল পরিদর্শক কার্যালয়
সূত্রের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন