Anis Khan Death Mystery

Anis Khan Murder Mystery: ‘ভোরে ছেলের দেহ চুরি করতে এসেছিল পুলিশ’, দাবি করলেন আনিসের বাবা

নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের তরফে আনিসের বাবা বা অন্য কোনও সদস্যের সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে ছিলেন স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ।

Advertisement

সারমিন বেগম

আমতা শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১০:১১
Share:

আনিসের বাবা সালেম খান বললেন, ‘'আমি সিট-এর উপর আর কী করে বিশ্বাস রাখব?’’ ফাইল চিত্র ।

সোমবার আনিসের দেহ তোলার অনুমতি দেওয়া হলেও শনিবার ভোররাতে সিট সদস্যদের দেহ তুলতে আসা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করলেন আনিসের বাবা এবং দাদা। আনিসের মৃতদেহ চুরি করার উদ্দেশ্যেই আধিকারিকরা এসেছিলেন বলেও তাঁদের দাবি। এই প্রসঙ্গে মৃত আনিসের বাবা সালেম খান বলেন, ‘‘আমি আদালতের রায় অমান্য করিনি। আদালতের রায় অনুযায়ী দেহ তোলা হবে। সিট-এর সদস্যদের জানিয়েছিলাম যে, আমি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি হতে পারি। সেই জন্য সময় চাইছি।’’ স্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও কেন দেহ তুলতে শনিবার ভোরেই হাজির হল পুলিশ? এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিজে থেকে ছেলের দেহ তোলাব। তা নিয়ে আগেই লিখিত জানিয়েছি। তার পরও ওরা রাতের অন্ধকারে চলে এল! এটাকে দেহ চুরি করার উদ্দেশ্য ছাড়া আর কী বলব? আমি সিট-এর উপর আর কী করে বিশ্বাস রাখব?’’

Advertisement

এই বিষয়ে আনিসের দাদা সাবির খান বলেন, ‘‘বাবা অসুস্থ। সেই কারণেই শুক্রবার সিটের সদস্যরা এলে তাঁদের সোমবার দ্বিতীয় বারের ময়নাতদন্ত করার কথা বলে লিখিত দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা শনিবার ভোরে দেহ নিতে চলে আসেন। তাঁরা নিশ্চয়ই কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছিলেন। তাই গ্রামের মানুষরা তাঁদের বাধা দেন।’’

সাবির আরও বলেন, হাই কোর্টের নির্দেশেই সিট তদন্ত করছে। সঠিক সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে তাঁর পরিবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন এবং এই বিষয়ে তাঁদের আইনজীবী সব সিদ্ধান্ত নেবেন।

প্রসঙ্গত, ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে কবর থেকে আনিসের দেহ না তুলেই ফিরে যেতে বাধ্য হল পুলিশ। শনিবার ভোররাতে দ্বিতীয় বার ময়নাতদন্তের জন্য আনিসের দেহ আনতে গ্রামে যায় পুলিশ। নিয়ম অনুযায়ী, পরিবারের তরফে আনিসের বাবা বা অন্য কোনও সদস্যের সেখানে উপস্থিত থাকার কথা। সেখানে ছিলেন স্থানীয় বিডিও এবং বিএমওএইচ। কবর থেকে দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য এসএসকেএম-এ নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া তখনও শুরু হয়নি। মাইকিং করে জানানো হয়, আনিসের দেহ তোলা হবে। তার পরেই গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। আনিসের আত্মীয়-প্রতিবেশী এবং গ্রামবাসীরা জমায়েত হয়ে অভিযোগ করেন, আগে আনিসের বাবার সঙ্গে কথা হয়েছে পুলিশের। তারা সোমবার দেহ নিয়ে যাওয়রা কথা জানিয়েছেন। তা হলে শনিবার কাকভোরে কেন পুলিশ এল? সিট-এর প্রতিনিধিরাই বা কোথায়, কার নির্দেশে এই পদক্ষেপ? প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এ নিয়ে তাঁরা রীতিমতো বিক্ষোভ শুরু করেন। বিডিও-কে ঘিরে ধরে প্রশ্ন করতে থাকেন তাঁরা। তার পরও বেশ কিছু ক্ষণ সেখানে অপেক্ষা করেন পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকরা। কিন্তু গ্রামবাসীরা ছিলেন অনড়। শেষমেশ দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের জন্য দেহ না তুলেই ফিরে যান পুলিশ ও সরকারি আধিকারিকরা। উল্লেখ্য, উত্তর ২৪ পরগনার জেলা আদালতের বিচারক বা তাঁর প্রতিনিধির উপস্থিতিতে ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।

গত বৃহস্পতিবার আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রনেতা খুনের মামলায় দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাই কোর্ট। নির্দেশে জানানো হয়, জেলা বিচারকের উপস্থিতিতে এই ময়নাতদন্ত করতে হবে। পাশাপাশি, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের একটি করে প্রতিলিপি আনিসের পরিবার এবং মামলাকারীকে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে মামলাকারীদের সিবিআই দিয়ে তদন্তের আবেদন খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট।

Advertisement

অন্য দিকে, শুক্রবার আনিসের বাবা ও তাঁর পরিবার হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে আইনজীবীর সঙ্গে টিআই প্যারেডে যান। যদিও আনিসের বাবা আগেই দাবি করেছেন, যাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাঁদের তিনি স্পষ্ট চিনতে পারেননি। তিনি এক জন বন্দুকধারী পুলিশকে দেখেছিলেন। তাঁকে দেখলে তিনি চিনতে পারবেন। পাশাপাশি, তদন্তের স্বার্থে শুক্রবার আনিসের মোবাইল ফোনটি তিনি জমা দেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন