Chinsurah

প্রাথমিক ক্রীড়ায় ‘চাঁদা’ শিক্ষকদের, শুরু বিতর্ক

প্রাথমিক ক্রীড়ায় সরকারি বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করছিল বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার সেই টাকা এক লাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়।

Advertisement

প্রকাশ পাল

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:২৪
Share:

আনন্দে: শ্রীরামপুর মহকুমার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের নিয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা। মঙ্গলবার বৈদ্যবাটীর বিএস পার্কে। নিজস্ব চিত্র

শোনা যাচ্ছে, সরকারি বরাদ্দ বেড়েছে। কিন্তু, হাতে আসেনি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পকেট থেকে, বিদ্যালয়গত ভাবে টাকা দিয়ে প্রাথমিকের বার্ষিক ক্রীড়া চলছে। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। প্রতিবাদ জানিয়েছে একাধিক শিক্ষক সংগঠন।

Advertisement

প্রাথমিক ক্রীড়ায় সরকারি বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি দীর্ঘদিন ধরেই করছিল বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। ২০১৯ সালে রাজ্য সরকার সেই টাকা এক লাফে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। ফলে, আয়োজন অনেকটা গুছিয়ে করা গিয়েছিল। করোনা পরিস্থিতিতে পরের দু’বছর স্পোর্টস হয়নি। এ বার ফের হচ্ছে। তিরিশের উপরে ইভেন্ট রয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্নদের জন্য ইভেন্ট ৮-১০টি।

প্রাথমিকে ক্রীড়া হয় প্রথমে বিদ্যালয় স্তরে। সেখান থেকে পঞ্চায়েত বা পুরসভা পর্যায়ে। তার পরে সার্কেলে (চক্র)। এর পরে মহকুমা এবং জেলা। শেষে রাজ্যস্তরে। ’১৯ সালে রাজ্য সরকার চক্রপিছু ১ লক্ষ টাকা করে দিয়েছিল। রাজ্যে ৭০০-রও বেশি টক্র রয়েছে। হুগলিতে ৪৭টি।

Advertisement

হুগলির শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনেকে জানিয়েছেন, এ বার রাজ্য চক্রপিছু বরাদ্দ বাড়িয়ে দেড় লক্ষ টাকা করেছে বলে তাঁরা শুনেছেন। আগে পঞ্চায়েত বা পুরসভা পরিকাঠামোর কাজে কিছুটা সহযোগিতা করত। সরকারি বরাদ্দ বেড়ে যাওয়ায় সেই সাড়া কম। তবে, মহকুমা পর্যায়ের খেলা শেষ হয়ে গেলেও সরকারি বরাদ্দ মিলবে কবে, উত্তর নেই।খেলার আয়োজনে তাঁদের থেকে চাঁদা নেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার শ্রীরামপুর মহকুমা পর্যায়ের ক্রীড়া হয় বৈদ্যবাটীতে। তিনশোর বেশি প্রতিযোগী ছিল। বৈদ্যবাটীর এক শিক্ষক বলেন, ‘‘কয়েক লক্ষ টাকা খরচ। স্থানীয় পুরসভা এবং বিধায়ক আর্থিক সহযোগিতা করেছেন। বাকিটা আমাদের চাঁদা।’’ অনেকেই জানান, রাজ্যের বরাদ্দ এলে তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তবে, কবে তা আসবে, আদৌ ফেরত পাওয়া যাবে কি না, এ নিয়ে তাঁরা সন্দিহান। ইউইউপিটিডব্লিউএ (উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন), এবিপিটিএ-র (নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতি) মতো সংগঠন এই প্রশ্নে সরব। তাদের অভিযোগ, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের থেকে চাপ দিয়ে বা জোর করে টাকা নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা দফতরে স্মারকলিপিও দেওয়া হয়েছে বলে ইউইউপিটিডব্লিউএ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সূত্রের খবর, প্রাক প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হুগলিতে পড়ুয়া দেড় লক্ষের বেশি। শিক্ষক-শিক্ষিকা প্রায় ১০ হাজার। রাজ্যে প্রাথমিকে ছাত্রছাত্রী প্রায় ২০ লক্ষ। শিক্ষক-শিক্ষিকা ২ লক্ষের আশপাশে।

পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (ডব্লিউবিটিপিটিএ) সূত্রের বক্তব্য, প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে সরকারি বরাদ্দে কিছুই হয় না। মাঠের পরিকাঠামো, মঞ্চ, পুরস্কার, টিফিন, দুপুরেরখাওয়া, অতিথিদের জন্য ফুল কেনা ইত্যাদি খাতে প্রচুর খরচ। স্থানীয় পঞ্চায়েত-পুরসভা অনেকটা ব্যয় করে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা সামান্য টাকা দিয়ে সাহায্য করেন। চাপ দিয়ে টাকা আদায়ের প্রশ্ন এই সংগঠনের কর্তারা উড়িয়ে দিয়েছেন। একই বক্তব্য প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা দফতরের কর্তাদেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন