coronavirus

কাল থেকে কি সব বাস মিলবে? সংশয়

বাস-মালিকেরা আশঙ্কিত, তাঁরা আর কর্মী পাবেন কিনা সেই প্রশ্নেও।

Advertisement

নুরুল আবসার ও গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০২১ ০৭:৪৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

করোনা সংক্রান্ত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল হয়েছে। ৫০% যাত্রী নিয়ে কাল, বৃহস্পতিবার থেকে বাস চলাচলের ছাড়পত্র দিয়েছে রাজ্য সরকার। কিন্তু দুই জেলায় কত বাস পথে নামবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কারণ, ডিজেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। বাস-মালিকদের ভাড়া বাড়ানোর দাবি নিয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি রাজ্য সরকার। বাস-মালিকেরা মনে করছেন, এই অবস্থায় পুরনো ভাড়ায় পরিষেবা যথাযথ বহাল রাখা লোকসানেরই নামান্তর।

Advertisement

হাওড়া জেলা বাস-মালিকেরা এ নিয়ে মঙ্গলবার নিজেদের মধ্যে বৈঠকে বসেছিলেন। বেশিরভাগ বাস-মালিকই ভাড়া না-বাড়ানো হলে বাস চালানো যাবে না বলে জানিয়েছেন। আজ, বুধবার আবার তাঁরা বৈঠকে বসছেন। সেখানেই তাঁরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়েছেন।

হাওড়া জেলা বাস-মালিক সংগঠনের সভাপতি অসিত পণ্ডিত বলেন, ‘‘দেখা যাক, বুধবারের বৈঠকে কী সিদ্ধান্ত হয়। বাস চালানোর সরকারি সিদ্ধান্তকে মান্যতা দেওয়ার ব্যাপার যেমন আছে, তেমনই বাস চালানোর খরচের কথাও সরকারকে ভাবতে হবে। সব কিছু বিচার করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’

Advertisement

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ১২ মে থেকে রাজ্যে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সাধারণ অবস্থায় হাওড়া গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন রুটে দৈনিক প্রায় এক হাজার বাস চলে। অনেক রুটের বাস কলকাতাতেও যায়। ট্রেন বন্ধ থাকায় বাস চলাচল করলে বহু মানুষের যাতায়াতের সুবিধা হবে। অফিস-কাছারি খুলে যাওয়ায় বাস চালানোর দাবি তুলছিলেন অনেকেই। এখন তাঁরা অনেক বেশি টাকা খরচ করে ছোট গাড়ি, মিনি ট্রাক, অটো-টোটো, এমনকি মোটরবাইক ভাড়া করেও কলকাতা বা শহরতলিতে যাতায়াত করছেন।

হুগলিতে বাস-শিল্প দীর্ঘদিন ধরেই ধুঁকছে। প্রায় সব রুটে টোটোর দাপটে জেরবার বাস-মালিকেরা। গত কয়েক বছরে জেলার বেশিরভাগ রুটেই বাসের সংখ্যা কমেছে। এ বার জ্বালানির দাম আকাশ ছুঁয়েছে। তার উপরে যাত্রিসংখ্যা বেঁধে দিয়েছে সরকার। ফলে, এই জেলার বাস-মালিকেরাও ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে এককাট্টা। তাঁরা মনে করছেন, সরকার বাসভাড়া বাড়ালে যাত্রীদের দিক থেকে সে ভাবে কোনও আপত্তি উঠবে না। তাঁরা কাল থেকে বাস চালাবেন বলে জানিয়েছে। কিন্তু সব রুটে সব বাস চলবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় থেকে যাচ্ছে।

হুগলির আন্তঃজেলা বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক গৌতম ধোলে জানান, তারকেশ্বর-বাঁকুড়ার ফুলকুসুমা রুটে একবার যাতায়াতে একটি বাসের সব মিলিয়ে ১৪ হাজার টাকা খরচ আছে। তাঁদের অন্তত ৮টি জেলার বিভিন্ন রুটে ২৫০টি দূরপাল্লার বাস চলে। পরিবহণ খরচের সাপেক্ষে এখন লাভ তলানিতে এসে ঠেকেছে। সরকার বাস ভাড়া না বাড়ালে তাঁরা আগামী দিনে বাস চালাতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন গৌতমবাবু। তিনি বলেন, ‘‘শিল্পের যা অবস্থা কর্মীরা কেউ কাজে আসতে চাইছেন না।’’

শ্রীরামপুর বাস-মালিক সংগঠনের সম্পাদক রঞ্জন প্রামাণিক বলেন, ‘‘আমরা যাত্রীদের জন্য বাস চালাব। অনেকে বেশি ভাড়া দিতেও রাজি। এখন বাসের ভাড়া বাড়াতে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। রাজ্য সরকারের জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি দেখা উচিত।’’

বস্তুত গত বছর থেকেই ভাড়া বাড়ানোর দাবি তুলছেন বাস-মালিকেরা। করোনা-দীর্ণ এই দু’বছরে পরিবহণ শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ, লকডাউনের জেরে বছরের অধিকাংশ সময় বাস বন্ধ থাকছে। এরপরে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, কেউ জানেন না। বাস-মালিকেরা আশঙ্কিত, তাঁরা আর কর্মী পাবেন কিনা সেই প্রশ্নেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement