Rachna Banerjee And Asit Majumdar

রচনা-অসিত দ্বন্দ্ব ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ’, সাংসদ উদ্বোধন করলেন স্মার্ট ক্লাসের, অনুপস্থিত বিধায়ক বললেন, আমার দুর্ভাগ্য!

স্মার্ট ক্লাসের উদ্বোধন করে রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিধায়কের যদি সকলকে মিলেমিশে নিয়ে চলার মানসিকতা থাকত, তা হলে ভাল করতেন। সকলকে নিয়ে মিলেমিশে থাকতে চাইলেই ভাল হত।’’

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ অগস্ট ২০২৫ ১৯:১৫
Share:

চুঁচুড়ার স্কুলে স্মার্ট ক্লাসের উদ্বোধনে তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

একটি স্কুলের উন্নয়নের কাজ। তাই নিয়ে তৃণমূলের দুই সাংসদ এবং বিধায়কের যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল, তা জিইয়ে রইল উন্নয়নমূলক কাজের শেষেও। চুঁচুড়া বাণীমন্দির স্কুলে স্মার্ট ক্লাসের উদ্বোধন করলেন তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যাধ্যায়। সেখানে অনুপস্থিত তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। কেন গেলেন না? অসিত বললেন, ‘আমার দুর্ভাগ্য’!

Advertisement

গত জুলাই মাসে চুঁচুড়া বাণীমন্দির স্কুলে ‘স্মার্ট ক্লাস’ তৈরি নিয়ে জোর দ্বন্দ্ব শুরু হয় তৃণমূলের দুই জনপ্রতিনিধির। হুগলির সাংসদ রচনার সঙ্গে লড়াইয়ে শেষমেশ রণেভঙ্গ দেন চুঁচুড়ার বিধায়ক অসিত। কিন্তু তা যে ছোট গল্পের মতো শেষ হয়েও শেষ হল না, তা পরিষ্কার হল শনিবার। নতুন তৈরি হওয়া স্মার্ট ক্লাসের উদ্বোধন করলেন রচনা। অনুপস্থিত থাকলেন বিধায়ক। তাঁর প্রসঙ্গ উঠতেই সাংসদ বললেন, ‘‘কাউকে ছোট করে কথা উচিত নয়। বিশেষত মহিলাদের বিদ্রুপ করা উচিত নয়।’’ আর ডাক না-পেয়ে অভিমানী অসিত জানালেন, তাঁকে ডাকাই হয়নি।

অসিতের দাবি ছিল, তিনি ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সদস্য। অথচ তাঁকে না-জানিয়ে ‘স্মার্ট ক্লাস রুম’ তৈরি করা হচ্ছে। অভিযোগ, ওই নিয়ে স্কুলে গিয়ে প্রধানশিক্ষিকার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন তিনি। দলের সাংসদের বিরুদ্ধেও তোপ দাগেন। শনিবার অবশ্য খানিক ‘নরম সুর’ শোনা গেল বিধায়কের গলায়। শনিবার স্মার্ট ক্লাসের উদ্বোধন করে রচনা বলেন, ‘‘বিধায়কের যদি সকলকে মিলেমিশে নিয়ে চলার মানসিকতা থাকত, তা হলে ভাল করতেন। সকলকে নিয়ে মিলেমিশে থাকতে চাইলেই ভাল হত।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমি বিভাজনে বিশ্বাসী নই। আজ উনি সকলের সঙ্গে মিলেমিশে কথা বলছেন। আগামিদিনেও যদি মেনে চলেন আমি খুব খুশি হব।’’

Advertisement

অসিতের আক্ষেপ, তাঁকে স্মার্ট ক্লাসের উদ্বোধনে স্কুল কর্তৃপক্ষের কেউ আমন্ত্রণ করেননি। অথচ তিনি পরিচালন কমিটির সদস্য এবং স্কুলের এক জন ‘ডোনার’ (দাতা)। তাঁর কথায়, ‘‘আমাকে তো জানানোই হল না! স্কুলে মেয়েদের সুবিধার জন্য সিসি ক্যামেরা আমার বিধায়ক তহবিল থেকেই দেওয়া।’’ পর ক্ষণেই চুঁচুড়ার বিধায়ক বলেন, ‘‘থাক সে কথা। আমি এখনও পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী থেকে শিক্ষা দফতর ওই স্কুলের পরিচালন কমিচির সদস্য করে রেখেছেন। কিন্তু আমি কিুছই জানলাম না... দুর্ভাগ্য আমার।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘কেন আমায় ডাকা হয়নি, কেন বলা হল না, সেটা বলতে পারব না। কিন্তু ওই স্কুলে আমার অবদান নেই, এমনটা নয়। আবার যে দিন প্রয়োজন পড়বে, সে দিন হয়তো স্কুল কর্তৃপক্ষ ডাকবেন।’’

তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, প্রকাশ্যে সাংসদ-বিধায়কের দ্বন্দ্ব মিটেছে শীর্ষ নেতৃত্বের সৌজন্যে। কিন্তু বরফ এখনও গলেনি। এখনও রচনা চুঁচুড়ায় কোনও দলীয় কর্মসূচিতে এলে সেখানে বিধায়ককে পাওয়া যাচ্ছে না। সামনেই বিধানসভা ভোট। দ্বন্দ্বে পুরোপুরি ইতি হলে আখেরে দলেরই মঙ্গল বলে মন্তব্য নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement