COVID Restriction

COVID Restriction: সংক্রমণ রোধে হাট বন্ধের সিদ্ধান্ত চুঁচুড়ায়, বিধি লঙ্ঘন বিধায়কেরই

করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে চুঁচুড়া পুরসভার মল্লিককাশেম হাট-সহ বেশ কিছু এলাকাকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ (কন্টেনমেন্ট জ়োন) করেছে প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২১ ০৮:৩৪
Share:

মল্লিককাশেম হাট বন্ধ রাখতে শুক্রবার মাইক প্রচারে অসিত মজুমদার। ঘড়ির মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির নেতৃত্বে বিধায়কই । ছবি: তাপস ঘোষ।

করোনা সংক্রমণে রাশ টানতে চুঁচুড়া পুরসভার মল্লিককাশেম হাট-সহ বেশ কিছু এলাকাকে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ (কন্টেনমেন্ট জ়োন) করেছে প্রশাসন। কিন্তু শুরুতেই করোনা বিধি লঙ্ঘন করতে দেখা গেল বিধায়ক অসিত মজুমদারকেই।

Advertisement

হাটটি আজ, শনিবার থেকে চার দিন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেই সিদ্ধান্তের কথা জানাতে শুক্রবার পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক ওয়ার্ডের কো-অর্ডিনেটর এবং তৃণমূলের এক দল কর্মী-সমর্থককে নিয়ে হাটে ঘুরলেন অসিতবাবু। সব মিলিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য আর্জি জানাতে এলেও বিধায়কের সদলবল উপস্থিতিতে শারীরিক দূরত্ব মানার বালাই ছিল না। রীতিমতো গাদাগাদি করেই চলল স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে প্রচার।

হাটে যাওয়ার আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ফোনে আড়ি পেতে অনৈতিক ভাবে তথ্য ‘চুরি’র অভিযোগে এ দিন সকালে চুঁচুড়ার ঘড়ির মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচিও হয় বিধায়কের নেতৃত্বে। সেখানেও দূরত্ববিধির তোয়াক্কা করা হয়নি বলে অভিযোগ।
এ নিয়ে সাধারণ মানুষের অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। কটাক্ষ করছেন বিরোধীরা। অমল মজুমদার নামে শহরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ভিড় না করার জন্য প্রচার ভিড় করে! জনপ্রতিনিধিরাই এমন করলে জন-সচেতনতা গড়ে উঠবে কী ভাবে?’’ বিজেপি নেতা স্বপন পালের টিপ্পনী, ‘‘তাড়ানোর নামে উল্টে করোনাকে ডেকে আনছেন বিধায়ক।’’
অসিতবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবং বাজারে প্রচার সবই করোনা-বিধি মেনেই হয়েছে। ৫০ জন জমায়েতের নির্দেশ রয়েছে। সেইমতোই জমায়েত হয়েছিল।’’

Advertisement

মল্লিককাশেম হাটটি পড়ছে পুরসভার ১৪, ১৫ এবং ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে। ওই তিনটি ওয়ার্ডই গণ্ডিবদ্ধ এলাকার মধ্যে পড়ছে। সংক্রমণ রুখতে আগামী চার সপ্তাহে কয়েক দিন করে হাটটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। হাটটি চুঁচুড়ার অন্যতম বড় বাজার।
পুরসভা সূত্রের খবর, হুগলির বিভিন্ন এলাকা বাদেও গঙ্গার ও পারে উত্তর ২৪ পরগনা এবং নদিয়ার একাংশ থেকে আনাজ বিক্রেতারা আসেন। বহু মানুষ কেনাকাটা করতে আসেন। ফলে, হাটে কী ভাবে লোক নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তা ভাবা হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার পুরভবনে হাটের ব্যবসায়ী সমিতিকে নিয়ে পুরকর্তারা আলোচনায় বসেন। মহকুমাশাসক (সদর) সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় ভিডিয়োর মাধ্যমে পরিস্থিতির কথা জানান। এর পরেই হাট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিধায়ক জানান, বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ, শনিবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা চার দিন এই হাট বন্ধ থাকবে। পরের তিন দিন খোলা থাকবে। তার পরে শনি থেকে সোমবার পর্যন্ত তিন দিন বন্ধ থাকবে। পরের চার দিন খোলা থাকবে। তার পরের দু’দিন অর্থাৎ শনি ও রবিবার ফের দোকানপাট বন্ধ থাকবে। তার পরের সপ্তাহে শুধু রবিবার দোকানপাট বন্ধ থাকবে। এই ভাবে চলতে থাকার সময় সংক্রমণের রেখচিত্রের ওঠা-নামা দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

চুঁচুড়া শহর লাগোয়া কোদালিয়া-১ ও ২ পঞ্চায়েতও ‘গণ্ডিবদ্ধ এলাকা’। ফলে, সেখানেও সংক্রমণ নিয়ে প্রশাসনের মাথাব্যথা রয়েছে। আজ, শনিবার কৃষ্ণপুর, রবীন্দ্রনগর ও চুঁচুড়া স্টেশন বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে প্রশাসনিক ভাবে বৈঠকের কথা। সেখানে ওই সব বাজারের ভিড় নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন