— প্রতীকী চিত্র।
হাওড়ার সালকিয়ায় ফ্ল্যাটের ভিতরে গৃহকর্তা দেবব্রত পালকে (৫০) খুনের ঘটনায় পুলিশ দুই নাবালককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদের মুখে নবম শ্রেণির ওই দুই পড়ুয়া স্বীকার করেছে যে, তাদের মারধরের জেরেই দেবব্রতের মৃত্যু হয়েছে। যদিও, ঠিক কী কারণে তারা এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তদন্তকারীরা জানান, দেবব্রত মোবাইলে কোনও আপত্তিকর ছবি দেখিয়ে ধৃত প্রতিবেশী কিশোরের পরিবারকে ব্ল্যাকমেল করছিলেন কিনা, অথবা এর পিছনে আর্থিক কোনও বিষয় জড়িয়ে আছে কিনা, সমস্তটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
গত সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে সালকিয়ার কৈবর্তপাড়া লেনে একটি বহুতলের চারতলার ফ্ল্যাট থেকে গৃহকর্তা দেবব্রতের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই ঘরের ভিতরেই পাশের ফ্ল্যাটের এক কিশোর ও তার এক সহপাঠীকে পাওয়া যায়। পুলিশ ওই দিনই তাদের আটক করে থানায় নিয়ে যায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। এর পরে ঘটনার দিনই রাতের দিকে মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করা হয়।
মঙ্গলবার হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে হেতু অভিযুক্তেরা নাবালক, তাই আমরা খুনের অভিযোগ দায়ের করার পরে সোমবার রাতেই জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির হাতে ওদের তুলে দিয়েছি। কমিটি ওদের কোনও সরকারি হোমে রাখার ব্যবস্থা করবে। তখন ফের পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে।’’ ওই পুলিশকর্তা জানান, দেবব্রত যে খুন হয়েছেন, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু ঠিক কী ভাবে তাঁকে খুন করা হল, তা জানতে মৃতদেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট এবং ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপরে নির্ভর করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কিসের আক্রোশ থেকে এই খুন, তা-ও জানার চেষ্টা হচ্ছে। অবৈধ কোনও সম্পর্ককে হাতিয়ার করে পড়শি কিশোরের পরিবারকে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখা হবে। এ জন্য ধৃতদের আরও ভাল ভাবে জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি ওই ছ’তলা আবাসনের বাকি আবাসিকদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।
ঘটনার দিন সকালে ওই ৪০৪ নম্বর ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে গৃহকর্তার ‘বাঁচাও, বাঁচাও’ আর্তনাদ শুনে সেখানে জড়ো হওয়া আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, ভিতরে ধস্তাধস্তির সময়ে একটি মোবাইল ফোন নিয়ে যে কাড়াকাড়ি হচ্ছে, তা তাঁরা সকলেই বুঝতে পেরেছিলেন। তদন্তকারীদের তাই প্রশ্ন, ওই ফোনের মধ্যে কি এমন কিছু ছিল বা রয়েছে, যে কারণে খুন হতে হল দেবব্রতকে? খুনের ঘটনার পিছনে দুই পরিবারের মধ্যে টাকাপয়সা নিয়ে বিবাদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। আপাতত সব দিক খোলা রেখেই তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।
প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর
সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ
সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে