বিক্ষোভ: রবিবার বিডিওর গাড়ি ঘিরে গ্রামবাসী। নিজস্ব চিত্র।
শাসকদলের গোষ্ঠী-কাজিয়া থামার লক্ষণ নেই তারকেশ্বরে। তার জেরে এ বার বিডিওকে বিক্ষোভের মধ্যে পড়তে হল!
রবিবার তারকেশ্বরের বালিগোড়ি-২ পঞ্চায়েতের পল্লবপুরে বিডিও জয়গোপাল পালের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে একটি পুকুর খোঁড়ার কাজে যুক্ত শ্রমিকেরা। বিক্ষোভের জেরে গাড়ি থেকে নামতেই পারেননি বিডিও। কিছুক্ষণের মধ্যেই গাড়ি ঘুরিয়ে তিনি ফিরে যান।
বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ তোলেন, বিডিও কাজ বন্ধ করতে এসেছিলেন। বিডিও অবশ্য পরে বিক্ষোভের কথা এড়িয়ে জানান, ওখানে কাজ কেমন হচ্ছে তা দেখতে গিয়েছিলেন।
কিন্তু কেন বিক্ষোভ?
তৃণমূলেরই একটি সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েতের সব আসন তৃণমূলের হলেও প্রধান সঞ্জয় বেলেলের সঙ্গে চার সদস্যের বনিবনা নেই। প্রধান তারকেশ্বরের উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ। ওই চার সদস্য পুরপ্রধান স্বপন সামন্তের অনুগামী বলে পরিচিত। দিন কয়েক আগে ওই চার জন বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, প্রধান একতরফা ভাবে তাঁদের এলাকায় কাজ করছেন। সূত্রের খবর, প্রশাসনের তরফে প্রধানকে বলা হয়, সদস্যদের এলাকার কাজ তাঁদের মাধ্যমেই করাতে হবে। এ দিন বিডিও যখন পল্লবপুরে যান, তখন রটে যায়, বিডিও কাজ বন্ধ করতে এসেছেন। এতেই শ্রমিকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।
পল্লবপুরের পঞ্চায়েত সদস্য সোমা পাত্র স্বপনবাবুর অনুগামী। তিনি বলেন, ‘‘আমাকে না-জানিয়েই প্রধান মাস্টার-রোল তৈরি করেছেন। বিডিও এসেছিলেন প্রধানের হাত থেকে মাস্টার-রোল নিতে। প্রধান দেননি। উল্টে শ্রমিকদের ভুল বুঝিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়।’’ পক্ষান্তরে প্রধান সঞ্জয়বাবুর দাবি, ‘‘বিডিও কাজ বন্ধ করতে এসেছিলেন। এতেই শ্রমিকেরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। কোনও প্রশ্নের উত্তর দেননি বিডিও।’’
পঞ্চায়েতের দু’পক্ষের বিবাদ মেটাতে গত শুক্রবার জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বৈঠক করেন। তাতেও সমস্যা মেটেনি। এ দিনের ঘটনার পরে তপনবাবু বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি। ওখানে কিছু সমস্যা রয়েছে। শুধরে নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’