প্রাচীন: দালানে দেবীর আরাধনা। নিজস্ব চিত্র
খানাকুলের ময়াল গ্রামের জলকর রায় পরিবারের পুজো শুরু হয়েছিল প্রায় ৩৫০ বছর আগে। সেখানে মহিষাসুর নেই। তবে রয়েছে দু’টি সিংহ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নবাবী আমলে ময়াল গ্রামের জমিদার ছিলেন বানীকন্ঠ রায়। তিনি ময়ালের দ্বারকেশ্বর নদ থেকে শুরু করে অধুনা পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক পর্যন্ত বিভিন্ন নদ-নদী থেকে জলকর আদায়ের অনুমতি পান। সেই টাকা থেকেই এই পুজো শুরু। সেই কারণে ওই জমিদার পরিবারটি এলাকায় ‘জলকর রায় পরিবার’ হিসাবেই বেশি পরিচিত। মূল পরিবারটি এখন ভাঙতে ভাঙতে ৫০টি ভাগে বিভক্ত।
পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের সদস্য অরবিন্দ রায় জানান, দেবোত্তর জমি এবং দু’টি পুকুরের মাছ চাষের আয় থেকে পুজো হয়। পরিবারের সদস্যদের চাঁদায় প্রাচীন দুর্গাদালান সংস্কার হয়। পুজোটির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় মহালয়ার আগেই। রায় পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিপদ বোধনের দিন পারিবারিক বিগ্রহ অষ্টধাতুর ভুবনেশ্বরী মূর্তিটি মূল মন্দির থেকে দুর্গাদালানে নিয়ে আসেন রায় বংশের কুলপুরোহিত। দুর্গার সঙ্গে সেই মূর্তিকেও অর্চনা করা হয়। প্রতিমা এখানে ডাকের সাজে সজ্জিত। প্রতিমার মুখের আদল বংশানুক্রমে একই রয়েছে। পুজো উপলক্ষে ঢাক-ঢোল ছাড়াও সানাই বসে। চালচিত্রের উপরে আঁকা থাকে বিভিন্ন পৌরাণিক ছবি। এই পুজোর সঙ্গে যুক্ত প্রতিমা শিল্পী, ঢাকি, ঢুলি, নাপিতেরা বংশানুক্রমে এই পরিবারের পুজোয় কাজ করছেন।
পরিবারের এক প্রবীণ সদস্য জানান, আগে প্রতিমা বিসর্জনের পরে শঙ্খচিল দর্শন করে ঠাকুর দালানে ফিরে শান্তি জল দেওয়া হতো। কিন্তু শঙ্খচিল এখন পাওয়া যায় না বললেই চলে। তাই এখন শঙ্খচিলকে স্মরণ করে দ্বারকেশ্বর নদীঘাট থেকে ফিরে আসা হয়।