হাহাকার: সব হারানোর যন্ত্রণা। ছবি: সুব্রত জানা।
খালি মদের বোতলে পেট্রল ভরে, সলতেতে আগুন ধরিয়ে ছুঁড়েছিল এ পক্ষ, ও পক্ষ। আর তাতেই পু়ড়ে খাক দু’পক্ষের তিনটি বাড়ি।
ইট-গাঁথুনি বাড়ির ছাদে ছিল ত্রিপলের ছাউনি। ফলে আগুন লেলিহান হয়েছে অল্প সময়ের মধ্যে। সোমবার উলুবেড়িয়ার কাঁটাবেড়িয়া মধ্যমপাড়ায় তৃণমূল-বিজেপির সংঘর্ষের আগুনে জখমও এক বিজেপি সমর্থক। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে, ওই রাতেই গ্রেফতার করা হয়েছে চারজনকে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নামে দেবকুমার পর্বত, অরবিন্দ প্রামাণিক, সুখেন মণ্ডল ওরফে ঝন্টু এবং সৌমিত্র মণ্ডল ওরফে মেট্টো।
মঙ্গলবারও গোটা গ্রাম ছিল থমথমে। বন্ধ দোকানপাট, এমনকী প্রতিদিনের আনাজ বাজারও বসেনি সকালে। সংঘর্ষের আবহে অস্থায়ী ক্যাম্প করেছে পুলিশ। আর যে তিনটি বাড়ি পুড়েছিল, তার একটিতে এ দিনও দেখা গিয়েছে ধিকধিকে আগুন। কোনও বাড়িতে আধপোড়া চাল ছড়িয়ে আছে মেঝে জুড়ে। কোনও বাড়ির পোড়া ঘরে উঁকি দিয়েছে পুড়ে যাওয়া টিভি সেট, বইপত্র। ধৃত সুখেন ও সৌমিত্রের বাড়ি পুড়েছে ওই দিন। বিজেপি সমর্থক ওই দুই ভাই জরির কাজ করে সংসার চালান। সুখেনের বাড়ির আগুন নেভাতে গিয়েই জখম হয়েছেন আর এক বিজেপি কর্মী
বিপ্লব দোলই।
তৃণমূল সমর্থক অর্জুন পর্বতের বাড়িও পুড়েছে। পেশায় ডাব বিক্রেতা অর্জুনের ভ্যান রিকশা ভেঙে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে, ছেলের পিক-আপ ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, মুকুল রায়ের পদযাত্রায় সামিল হওয়ার জন্য সমীর খানের নেতৃত্বে জনা দশেক বিজেপি কর্মী-সমর্থক মধ্যমপাড়ায় জড়ো হন সোমবার দুপুর ২টো নাগাদ। সে সময় তাঁদের সঙ্গে বচসা বাঁধে তৃণমূল কর্মী অরবিন্দ প্রামাণিকের। শুরু হয় হাতাহাতি। সমীরবাবুর মাথায় লোহার রড দিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আরও কয়েকজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নির্বাচনের আগে অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না।
আগামী ২৯ জানুয়ারি উলুবেড়িয়ায় লোকসভা উপ-নির্বাচন। বিজেপি প্রার্থী অনুপম মল্লিক অভিযোগ করেন, ‘‘তৃণমূলের উদ্দেশ্যই বিজেপিকে আটকানো। সে জন্যই মুকুল রায়ের পদযাত্রায় আসতে বাধা দেওয়া হয়েছিল। মারধরও করা হয়।’’
তৃণমূলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি পুলক রায় আবার বলেন, ‘‘আমাদের দলীয় পতাকা ছিঁড়ে দিয়ে কর্মীদের মারধর করা হয়। বাড়িতে আগুন লাগানো হয়।’’