বন্ধুদের আড্ডায় খুন যুবক, ধৃত ৪

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সঞ্জুর বাড়ি বৈশালীতেই। সোমবার রাত ন’টা নাগাদ সঞ্জু, রাজু-সহ আট জন স্থানীয় একটি পুকুরের ধারে আমগাছের তলায় আড্ডা দিচ্ছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৯ ০০:৫৯
Share:

নিহত: সঞ্জু দে। নিজস্ব চিত্র

আড্ডা দিতে গিয়ে বচসার জেরে সোমবার রাতে শেওড়াফুলির বৈশালী এলাকায় আক্রান্ত হয়েছিলেন এক তরুণ। বাঁশ দিয়ে তাঁর মাথায় মারা হয়েছিল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনি ভর্তি ছিলেন কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সঞ্জু দে (১৯) নামে ওই তরুণের মৃত্যুতে খুনের অভিযোগ উঠল। রাতেই পুলিশ মূল অভিযুক্ত রাজু পাকিরা-সহ চার যুবককে গ্রেফতার করে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সঞ্জুর বাড়ি বৈশালীতেই। সোমবার রাত ন’টা নাগাদ সঞ্জু, রাজু-সহ আট জন স্থানীয় একটি পুকুরের ধারে আমগাছের তলায় আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেই সময়ে কোনও কিছু নিয়ে তাঁদের বচসা হয়। অভিযোগ, এর মধ্যেই পাশে পড়ে থাকা একটি বাঁশ দিয়ে সঞ্জুকে মারা হয়। সঞ্জু বাড়ি ফিরে জ্ঞান হারান। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতার ওই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

মৃত্যুর খবর চাউর হতেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। নিহতের বাবা সঞ্জয় দে শ্রীরামপুর থানায় খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, ‘‘সঙ্গীদের মধ্যে কেউ ছেলেকে ১০ হাজার টাকায় একটি মোটরবাইক বিক্রি করবে বলেছি‌ল। কিন্তু ছেলে টাকা দিতে পারেনি। বাইকও নেয়নি। তাই সে দিন ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে খুন করল।’’

Advertisement

ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দেহে স্থানীয় বাসিন্দারা দু’জনকে ধরে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পরে আরও দু’জন গ্রেফতার হয়। ধৃতদের বুধবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। রাজুকে চার দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। বাকিদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় অভিযুক্ত আরও তিন জন। তাদের খোঁজ চলছে। হামলাকারীরা মদ্যপ ছিল বলে নিহতের পরিবারের লোকজনের অভিযোগ।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই পুকুরের ধারে প্রতিদিন সন্ধ্যায় মদ-গাঁজার আসর বসে। সেখানে আসা যুবকেরা মেয়েদের উত্যক্ত করে। পুলিশকে জানিয়েও ফল হয়নি। স্থানীয় এক প্রৌঢ়ের কথায়, ‘‘কদাচিত পুলিশ হানা দিলে আড্ডা দু’এক দিনের জন্য বন্ধ হয়। ফের যে কে সেই।’’ এক গৃহবধূর কথায়, ‘‘বাইরের উটকো ছে‌লেরাও আড্ডা জমায়। এলাকার পরিবেশ ওদের জন্য নষ্ট হচ্ছে। পুলিশ আড্ডা বন্ধের ব্যবস্থা করুক।’’

অনেকেরই অভিযোগ, এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতার মদত থাকায় ওই যুবকেরা পুলিশের কাছ থেকে পার পেয়ে যায়। এক যুবক বলেন, ‘‘আমি এক দিন নেশা করতে বারণ করায় ওরা মারতে গিয়েছিল। ভয়ে আর কোনও দিন কিছু বলিনি। এ বার অন্তত যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’’ চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, নিয়মিত অভিযান চালিয়ে মদ-গাঁজার ঠেক বন্ধ করা হয়। ওই এলাকায় টহলদারিও
বাড়ানো হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement