হাওড়া শহরে ৪০০টি বাড়িকে বিপজ্জনক ঘোষণা করল হাওড়া পুরসভা। এর মধ্যে ২০টি বাড়িকে অতি বিপজ্জনক ঘোষণা করা হয়েছে। বর্ষার আগেই সেগুলি ভেঙে ফেলার কাজ শেষ করা হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। হাওড়ার পুর কমিশনার তথা প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘হাওড়া পুর আইনের ১৮০ ধারা অনুযায়ী বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে ভেঙে দেওয়া হবে। তবে বাড়ি ভাঙার আগে সেখানে বাসিন্দা থাকলে নোটিস দেওয়া হবে যাতে তাঁরা অন্যত্র চলে যান। আইন অনুযায়ী, ওই সব বাড়ির বাসিন্দাদের বিকল্প বাসস্থানের ব্যবস্থা করার দায়িত্ব পুরসভার নয়।’’
গত ১০ এপ্রিল হাওড়ার ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডের একটি পুরনো বাড়ির একাংশ কালবৈশাখী ঝড়ে ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় এক গৃহবধূর। এর পরেই পুরসভার পক্ষ থেকে বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে ১৫ দিনের মধ্যে তালিকা তৈরির করার জন্য বরোগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এই তালিকা তৈরির সময়ে ঘটে আরও একটি দুর্ঘটনা। উত্তর হাওড়ার বাঁধাঘাট মোড়ে পুরসভার চিহ্নিত একটি জরাজীর্ণ বাড়ির একাংশ ভেঙে আটকে পড়েন পাঁচ মহিলা-সহ আট জন।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ধরনের বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা হাওড়ায় অনেক থাকলেও কেন্দ্রীয় ভাবে কোনও তালিকা পুরসভার হাতে ছিল না। তাই নতুন করে তালিকা তৈরি করা হল। পুর কমিশনার জানান, মঙ্গলবারই বরোগুলি থেকে পুরসভার বিল্ডিং দফতরে ৪০০টি বিপজ্জনক বাড়ির তালিকা সমস্ত তথ্যপঞ্জী-সহ জমা পড়েছে। তালিকায় বাড়িগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যে সব বাড়িগুলি জরাজীর্ণ ও বড় রাস্তার ধারে অবস্থিত অথবা যে বাড়িগুলি ভগ্নপ্রায় এবং তার মধ্যে বহু
মানুষ বাস করেন, সেই সব বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে অতি বিপজ্জনক হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। কারণ এই বাড়িগুলি ভেঙে পড়লে প্রচুর প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ৪০০টি বাড়ি বিপজ্জনক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, তার ৪০ শতাংশ বাড়ি মধ্য হাওড়ার ৪ নম্বর
বরোর অন্তর্গত।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
পুর কমিশনার বলেন, ‘‘এই ধরনের বাড়িগুলি যাতে বর্ষার আগেই ভেঙে ফেলা যায়, সেই চেষ্টা করা হচ্ছে। এই সব বাড়ির বাসিন্দাদের পুর আইনের ১৮০ ধারা অনুযায়ী আগে নোটিস দেওয়া হবে। তাঁদের পুনর্বাসনের দায়িত্ব পুরসভার না হলেও কী ভাবে তাঁদের অন্যত্র থাকার ব্যবস্থা করা যায়, তা বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করা হবে।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, যে ৪০০টি বাড়িকে বিপজ্জনক বলে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেই বাড়িগুলিতে বোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। পাশাপাশি, বাড়ির মালিকদেরও বিষয়টি নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। ইতিমধ্যেই তালিকার ৮০ শতাংশ বাড়ির মালিককে নোটিস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়ি ভাঙার সময়ে প্রয়োজনে পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নেওয়া হবে বলেও জানান পুর কমিশনার।
পুর কমিশনারের বক্তব্য, বিপজ্জনক বাড়িগুলির মধ্যে অধিকাংশই একতলা, দোতলা কিংবা তিনতলা বাড়ি। প্রায় ৫০০ বছরের প্রাচীন শহর হাওড়ায় পুরনো বাড়িগুলির অধিকাংশই নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই সব বাড়ির মধ্যে যেগুলি মেরামত করেও টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়,
সেগুলি ভেঙে না ফেলা হলে সমস্যা তৈরি হবে আগামী দিনে। তাই সেগুলি দ্রুত ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।