হরিপালে ডাইন অপবাদে ঘরছাড়া পরিবার

গত শুক্রবার বাবলুবাবু স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে গ্রামে ফিরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশের কটূক্তি এবং হুমকিতে তাঁকে ফিরে যেতে হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

দীপঙ্কর দে

হরিপাল শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০১৯ ০১:১১
Share:

প্রতীকী ছবি।

ডাইন অপবাদে মাঝেমধ্যেই হরিপালের নানা গ্রামে কোনও ব্যক্তি বা পরিবারের উপরে গ্রামবাসীদের একাংশের অত্যাচারের অভিযোগ উঠছে। কিছুদিন আগেই সহদেব পঞ্চায়েত এলাকার থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত একটি শিশুর পরিবারকে একঘরে করে রাখার অভিযোগ উঠেছিল গ্রামবাসীদের একাংশের বিরুদ্ধে। পুলিশ ব্যবস্থা নেয়। এ বার বন্দিপুর গ্রামের বাগানপাড়া এলাকার একটি পরিবার তিন মাস ধরে
ঘরছাড়া হয়ে থাকার অভিযোগ তুলল। পুলিশকে বিষয়টি জানানো হলেও প্রতিকার মেলেনি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওই পরিবারের কর্তা বাবলু মুর্মু।

Advertisement

গত শুক্রবার বাবলুবাবু স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে গ্রামে ফিরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশের কটূক্তি এবং হুমকিতে তাঁকে ফিরে যেতে হয় বলে অভিযোগ। বাবলুবাবু বলেন, ‘‘গ্রামে কেউ মারা গেলেই আমাদের ডাইন অপবাদ দেওয়া হয়। তিন মাস ধরে গ্রামছাড়া হয়ে রয়েছি। মেয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। ছেলে অঙ্গনওয়াড়িতে। ওদের পড়াশোনা বন্ধ। পুলিশ কিছু করছে না। বাড়ি ফিরতে পারছি না।’’

কেন এ ধরনের কুপ্রথা গ্রামে চলছে? এ বিষয়ে বন্দিপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গোবিন্দ গায়েনের দাবি, ‘‘গ্রামে কোনও পরিবারের উপর এই ধরনের নির্যাতন হওয়া উচিত নয়। তবে ওই পরিবারের তরফে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমরা গ্রামবাসী এবং ওই পরিবারের সদস্যদের ডেকে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’’ হুগলি (গ্রামীণ) জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কী পরিস্থিতিতে কেন ওই পরিবারটিকে কটূক্তি, হুমকি শুনতে হচ্ছে সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

Advertisement

বাবলুবাবু পেশায় খেতমজুর। তিনি জানান, মাসতিনেক আগে পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে স্ত্রী এবং ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাঁকে গ্রাম ছাড়তে হয়। নালিকুলে তাঁর স্ত্রী পূজার বাপের বাড়ি। নিরাপত্তার কথা ভেবে সন্তানদের তিনি তাদের মামারবাড়িতে রাখতে বাধ্য হন। পুলিশকেও বিষয়টি জানান বলে তাঁর দাবি।

বাবলুবাবু জানান, স্ত্রীকে নিয়ে তিনি প্রথমে কিছুদিন বাঁকুড়ায় মামারবাড়িতে ছিলেন। তারপর শিয়াখালায় অন্য এক আত্মীয়ের বাড়িতে কিছুদিন কাটান। বাবলুবাবু জানান, তিনি ভেবেছিলেন, কিছুদিন গ্রামে না থাকলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু পরিস্থিতি বদলায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন