থানার সামনে ধৃতরা। নিজস্ব চিত্র
সাত দিন আগে ‘অপহৃত’ হয়েছিলেন আরামবাগের এক বস্ত্র ব্যবসায়ী। সোমবার দুপুরে কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকা থেকে শেখ ইমতিয়াল আলি নামে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ। তার আগে ধর্মতলা চত্বর থেকে অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় রাজু কুমার সাউ নামে এক ব্যক্তিকে। তার বাড়ি বৌবাজার থানা এলাকার জানবাজারে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের একাংশের দাবি, ধৃতের সঙ্গে অপহৃতের পূর্ব পরিচয় ছিল। ব্যবসায়িক আলোচনার জন্য ডেকে এনে তাঁকে অপহরণ করা হয়। এ দিন মুক্তিপণ বাবদ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নেওয়ার সময় রাজুকে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। ইমতিয়াজের পোশাকের ব্যবসা রয়েছে বর্ধমানের রায়না থানার শ্যামসুন্দরে। ব্যবসাকে কেন্দ্র করে তিনি বিভিন্ন পরিচিতর কাছ থেকে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা ধার করেন। সেই ধার শোধ করতে না-পারায় পাওনাদাররা
বাড়িতে চড়াও হয় কয়েকবার। পাওনাদারদের হাত থেকে বাঁচতে অতীতে ইমতিয়াজের বাড়ি থেকে পালিয়ে যাওয়ারও নজির আছে। অপহরণের ঘটনার পিছনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে তদন্তকারীরা জানিয়েছেন। ধৃত রাজুর দাদা সঞ্জয় অবশ্য দাবি করেছেন, ভাইকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। তবে, ইমতিয়াজের সঙ্গে যে তাঁদের পূর্ব পরিচয় ছিল, তা
স্বীকার করেছেন।
এ দিন দুপুরে ধর্মতলার একটি বস্ত্র বিপণির সামনে সাদা পোশাকে দাঁড়িয়ে ছিল আরামবাগ এবং হেয়ার স্ট্রিট থানার পুলিশের যৌথ দল। একটু দুরে টাকা নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন ইমতিয়াজের ভাই। তাঁর হাতে মুক্তিপণ নেওয়ার জন্য রাজু এগিয়ে আসতেই পুলিশের দলটি তাকে পাকড়াও করে। ধৃতকে প্রথমে হেয়ার স্ট্রিট থানায় আনা হয়। পরে তদন্তকারীরা তাকে আরামবাগ নিয়ে যান।
ব্যবসায়ী ইমতিয়াজের বাড়ি আরামবাগের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের ঘিয়া এলাকায়। গত ১১ মার্চ তিনি নিখোঁজ হন। রবিবার তাঁরা দাদা আরামবাগ থানায় রাজুর নামে ভাইকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। তাতে তিনি জানান, ভাইয়ের মুক্তিপণ বাবদ প্রায় দেড় লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। পরে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা নিয়ে রাজু কলকাতার ধর্মতলায় আসতে বলে তাঁকে।
তদন্তকারীরা জানান, সেই মতো এ দিন টাকা নিয়ে ধর্মতলায় ওই বস্ত্র বিপণির সামনে অপেক্ষা করতে থাকেন ইমতিয়াজের ভাই। তদন্তকারীদের দাবি, জেরার মুখে রাজু জানায়, নিউ মার্কেট এলাকায় আটকে রাখা হয়েছে অপহৃত ইমতিয়াজকে। পরে সেখান থেকে তাঁকে উদ্ধার করা হয়। এ দিন সন্ধ্যায় আরামবাগ থানায় ইমতিয়াজ এবং রাজুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ।