প্রতীকী ছবি।
জিটি রোডে টোটো চলার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে হাইকোর্ট। অথচ সেই নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে অবাধ যাতায়াত। বৃহস্পতিবার সকালে শ্রীরামপুরের মানিকতলায় জিটি রোডে টোটোর ধাক্কায় মৃত্যু হল এক মহিলার। এই ঘটনায় মৃতের নাম ছায়ারানি ভট্টাচার্য (৪৫)। তিনি ওই এলাকারই বাসিন্দা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই সময় ছায়াদেবী কিছু কেনার জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। মানিকতলায় জিটি রোডের ধারে তিনি যখন দাঁড়িয়েছিলেন তখনই ওই ঘটনা। ছায়াদেবীকে গুরুতর জখম অবস্থায় শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
এ দিনের ঘটনার জেরে ফের সামনে এল শ্রীরামপুর শহরে টোটোর দাপাদাপির অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত কয়েক বছরে শ্রীরামপুরের রাস্তা টোটোতে ছেয়ে গিয়েছে। অলিগলি তো বটেই, শহরের প্রধান রাস্তা জিটি রোডেও অসংখ্য টোটো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তাতে এক দিকে যেমন যানজট বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। অথচ, হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী জিটি রোডে টোটো চলারই কথা নয়। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই ব্যাটারিচালিত এই গাড়ির সংখ্যা বেড়েছে। এমনকী নেতাদের বকলমে অনেক টোটো চলে বলেও অভিযোগ।
ঘটনা হচ্ছে, চন্দননগর কমিশনারেট গঠন হওয়ার পরে টোটো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছিল। বৈঠকে কমিশনারেটের আধিকারিকদের পাশাপাশি জেলা পরিবহণ দফতর, মহকুমা প্রশাসনের অফিসার, শাসক দলের বিধায়কের উপস্থিতিতে মাস কয়েক আগে বিভিন্ন পুরসভার কর্তাদের সঙ্গে এ নিয়ে বৈঠক হয়। বৈঠকে পুরসভাগুলিকে দায়িত্ব দেওয়া হয় নিজেদের এলাকায় টোটোর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণ করতে। সিদ্ধান্ত হয়, সচিত্র পরিচয়পত্র এবং প্রয়োজনীয় নথি দাখিল করে টোটোমালিক তথা চালক নাম নথিভুক্ত করাতে পারবেন। এক জনের নামে একটি বেশি টোটো থাকবে না। বলা বাহুল্য, সেই সিদ্ধান্ত কাগজ-কলমেই রয়ে গিয়েছে।
চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তার আক্ষেপ, ‘‘পুরসভা সহযোগিতা করলে টোটোকে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণ করা যেত।’’ পুলিশ কমিশনার পীযূষ পাণ্ডে বলেন, ‘‘সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ীই টোটো চলবে। কোথাও কোথাও সমস্যা হয়তো রয়েছে। পুজোর পর উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’