জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন পুলিশ বাহিনীর। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
ধীরে ধীরে খানাকুল-২ ব্লকে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে বৃহস্পতিবার দাবি করল প্রশাসন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, এ দিন এলাকায় জল বাড়েনি। পরিস্থিতির উপরে নজর রয়েছে। এ দিন ব্লকের জলমগ্ন কয়েকটি এলাকা পরিদর্শনে যান হুগলির (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার তথাগত বসু, এসডিপিও (আরামবাগ) নির্মল দাস। পুলিশের তরফে ত্রাণসামগ্রী বিলি করা হয়।
মহকুমার সব থেকে নিচু জায়গা খানাকুল-২ ব্লকের বেশ কিছু এলাকা গত কয়েকদিন ধরেই জলের তলায়। বৃষ্টির জমা জল না-বেরনোয় ভোগান্তিতে পড়েছেন বহু মানুয। মহকুমার বিভিন্ন জায়গা থেকে জল এসে জমেছে খানাকুল-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। যার জেরে কার্যত বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে সেখানে।
খানাকুল-২ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জলমগ্ন হয়েছে জগৎপুর, মাড়োখানা, ধান্যগোড়ী, রাজহাটি-১ এবং শাবলসিংহপুর পঞ্চায়েতের গ্রামগুলি। ডুবে গিয়েছে মাঠ-ঘাট। বেশ কিছু এলাকা রয়েছে প্রায় ৩ ফুট জলের তলায়। অনেক গ্রাম এখনও জলবন্দি। জরুরি প্রয়োজনে যাতায়াতের জন্য গ্রামবাসীর ভরসা বলতে রয়েছে নৌকা।
এ দিকে প্রশাসন সূত্রে দাবি করা হয়েছে, ডিভিসি খুব বেশি জল না-ছাড়ায় পরিস্থিতির অবনতি হয়নি। দ্বারকেশ্বরও এবং রূপনারায়ণ ভর্তি হয়ে গেলেও দামোদর এবং মুণ্ডেশ্বরী এখনও ভরেনি। সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিভিসি ২৮,৮০০ কিউসেক জল ছেড়েছে। মহকুমার সমস্ত নদ-নদী, খাল-বিল এবং বৃষ্টির জল নেমে দক্ষিণ প্রান্তে রূপনারায়ণ নদে পড়ে। রূপনারায়ণ ভর্তি হয়ে যাওয়ায় জমা জল নামছে না।
বিডিও (খানাকুল-২) দেবল উপাধ্যায় বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সজাগ আছি। এ দিন নতুন করে জল বাড়েনি। অবস্থার ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে।”
এ দিন পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল জগদীশতলা থেকে নৌকায় জগৎপুর পঞ্চায়েতের বাসাবাটিপাড়ায় গিয়েছিলেন। জগদীশতলা থেকে গড়েরঘাটের রাস্তা গত মঙ্গলবার বিকাল থেকেই প্রায় ৩ ফুট জলের তলায়। বাসাবাটিতে পুলিশের তরফে ৪০০ প্যাকেট ত্রাণ বিলি হয়। প্যাকেটে ছিল চিঁড়ে, মুড়ি, বিস্কুট, বেবি ফুড, চিনি। পুলিশ সুপার জলবন্দি মানুষের সঙ্গে কথা বলেন। এলাকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও জানতে চান। পুলিশ সুপারের কাছে পর্যাপ্ত ত্রিপল দাবি করেছেন এলাকাবাসী। বাসাবাটিতে কয়েকটি বাড়ি জলমগ্ন। তাঁদের স্থানীয় ‘ফ্লাড শেল্টার’-এ রাখা হয়েছে। পুলিশের কাছে ফ্লাড শেল্টারে থাকা বলরাম ধাড়া নামে এক গ্রামবাসীর আবেদন, “এখানে থাকা পরিবারগুলির জন্য নিয়মিত ত্রাণের ব্যবস্থা করা গেলে ভাল হয়।” এসডিপিও জানান, পুলিশের তরফে সবরকম সহযোগিতা করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।