পুজোর আগে হতাশা বেগমপুর-ধনেখালিতে

জিএসটি-র ধাক্কায় কাত তাঁতির মাকুও

জিএসটি চালু হওয়ার পরে তাঁতের শাড়ির দাম নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে তাঁতিরা শাড়ি তৈরির নতুন বরাত পাচ্ছেন না বললেই চলে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

রাজবলহাট শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০১৭ ০২:০৭
Share:

টানা-পড়েন: তাঁতের শাড়ি তৈরি হচ্ছে রসিদপুরে। নিজস্ব চিত্র

পুজোর কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যান্য বছর এই সময়ে হুগলির তাঁতি পাড়াগুলিতে দম ফেলবার ফুরসত থাকে না। কিন্তু এ বার পরিস্থিতি অনেকটাই আলাদা। কারণ জিএসটি। এই কর চালু হওয়ার পরে মাথায় হাত পড়েছে তাঁতশিল্পীদের। শাড়ি তৈরির বরাত না মেলায় কেউ কেউ তাঁত ছেড়ে একশো দিনের কাজ করতে শুরু করেছেন।

Advertisement

ধনেখালি, বেগমপুর, রাজবলহাট হল হুগলির পুরনো তাঁত মহল্লা। দেশে তো বটেই, এইসব এলাকায় তৈরি তাঁতের শাড়ির কদর রয়েছে বিদেশেও। প্রতি বছর দুর্গাপুজোর আগে এখানে তৈরি শাড়ির চাহিদা বাড়ে। হাসি ফোটে তাঁতি পরিবারে। কিন্তু জিএসটি চালু হওয়ার পরে তাঁতের শাড়ির দাম নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা। ফলে তাঁতিরা শাড়ি তৈরির নতুন বরাত পাচ্ছেন না বললেই চলে।

হুগলির তাঁতিপাড়াগুলিতে কথা বলে জানা গিয়েছে, সাধারণত পাইকারি ব্যবসায়ীদের দেওয়া সুতো দিয়ে তাঁতিরা শাড়ি বোনেন। তারপর সেই শাড়ি পাইকারদের ঘরে পৌঁছে দেন তাঁরা। বিনিময়ে মজুরি পান। অনেক তাঁতি নিজেরাই বাজার থেকে সুতো কিনে শাড়ি বানিয়ে পাইকারদের বিক্রি করেন। তাই এতদিন শাড়ি বিক্রির বাজারের জন্য তাঁতিদের আলাদা করে চিন্তা করতে হতো না। কিন্তু জিএসটি লাগু হওয়ার পরে সুতোর দাম বেড়েছে। পাইকারেরা তাঁতিদের বেশি সুতো দিতে চাইছেন না। একসঙ্গে বেশি শাড়িও কিনতে চাইছেন না তাঁরা।

Advertisement

জাঙ্গিপাড়ার তাঁতি গোপাল দে বলেন, ‘‘আমরা ছয় ভাই নিজেরাই শাড়ি বুনে পাইকারি ব্যবসায়ীদের বিক্রি করি। একটি শাড়ি বানিয়ে কমবেশি ২৫০ টাকা পাই। জিএসটি-র জন্য সুতোর দাম বাড়ায় শাড়ির বরাত কম আসছে। রোজগারও কমেছে।’’ রোজগার প্রায় অধর্কে হয়ে গিয়েছে বলেও জানান তাঁরা।

হুগলির বেগমপুর, ধনেখালির তাঁতিপাড়াতেও কমবেশি একই অবস্থা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন পাইকারি ব্যবসায়ীর দাবি, জিএসটি অনুয়ায়ী দাম ফেললে তাঁতের শাড়ির দাম অনেক বেড়ে যাবে। আবার পুরনো দামে শাড়ি বেচলে তাঁদের ক্ষতি। তাই তাঁতিদের দিয়ে এখন সেভাবে শাড়ি বোনাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। আর এর জেরে বাজারে শাড়ির দাম বাড়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তাঁতিরা।

ধনেখালির বিধায়ক তথা রাজ্যের কারিগরি শিক্ষামন্ত্রী অসীমা পাত্রের আশ্বাস, ‘‘জিএসটির জেরে তাঁতিদের সমস্যার কথা শুনেছি। বিষয়টি আমি বিধানসভায় বলব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন