‘কুষ্ঠ’ সন্দেহে প্রৌঢ়কে অচ্ছুত করার অভিযোগ

ডান পায়ের দু’টো আঙুল এক সময় কেটে যাওয়ায় আকারে ছোট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভাবেননি তার জন্য প্রতিপদে এমন হেনস্থা হতে হবে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৫১
Share:

ডান পায়ের দু’টো আঙুল এক সময় কেটে যাওয়ায় আকারে ছোট হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু ভাবেননি তার জন্য প্রতিপদে এমন হেনস্থা হতে হবে।

Advertisement

গোঘাট-২ ব্লকের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের সেনাই গ্রামের আদিবাসী পাড়ায় থাকেন বাসু টুডু। বছর বাহান্নর ওই প্রৌঢ়ের আঙুলের এমন দশা দেখে তাঁর ‘কুষ্ঠ’ হয়েছে সন্দেহ করে গ্রামে ‘অচ্ছুত’ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। বাসুবাবুর অভিযোগ, তাঁকে নলকূপ, পুকুরের জল ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না। গ্রামে কোনও আচার-অনুষ্ঠানেও ডাকা হচ্ছে না। যদিও তাঁর পরিবারের উপরে এ সব নিষেধাজ্ঞা নেই বলে তিনি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, চিকিৎসক তাঁর কুষ্ঠ হয়নি বলে জানানো সত্ত্বেও পরিস্থিতি বদলায়নি।

আরামবাগের মহকুমা শাসক প্রীতি গোয়েল বলেন, “বিষয়টা খতিয়ে দেখে বিডিওকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ বৃহস্পতিবার বিডিও অরিজিৎ দাস, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি পুতুল মুর্মু, বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের প্রধান সুস্মিতা মণ্ডল ওই গ্রামে গিয়ে লোকজনদের সঙ্গে কথা বলেন। বিডিওর বক্তব্য, ‘‘বাসু বাগ সম্পূর্ণ সুস্থ। আমরা লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁকে সামাজিক বয়কটও করা হয়নি। কয়েকজন প্রতিবেশী কুষ্ঠ সন্দেহে তাঁকে উত্ত্যক্ত করছেন।’’

Advertisement

তিনি আরও জানান, কুষ্ঠ রোগ যে ছোঁয়াচে নয়, এ নিয়ে সরকারি প্রচার থাকলেও এ ধরনের ঘটনায় বোঝা যাচ্ছে কুষ্ঠ নিয়ে এখনও সচেতনতার অভাব রয়ে‌ছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, সেনাই গ্রামের আদিবাসী পাড়ায় ৩০টি পরিবারের বাস। সকলেই দিনমজুর। বছর সাতেক আগে বাড়ি তৈরির সময় পাথর পড়ে বাসুর ডান পায়ের দু’টি আঙুল থেঁতলে যায়। বাসুর কথায়, ‘‘সেই সময় ভাল চিকিৎসা করাতে না পারায় আঙ্গুল দুটো পচে গিয়ে হাড় বেরিয়ে পড়ে। পরে আরামবাগে চিকিৎসা করালে সম্পূর্ণ সেরে যায়। কিন্তু আঙুল দুটো ছোট হয়ে যায়। লোকজন তাই দেখে আমার কুষ্ঠ হয়েছে বলতে শুরু করে। তারপর থেকেই এই কাণ্ড।’’

স্ত্রী বেলামণি টুডু বলেন, “স্বামীকে অচ্ছুত করে রাখা নিয়ে ব্লকের স্বাস্থ্য দফতর এবং কামারপুকুর রামকৃষ্ণ মিশন পাড়ায় এসে মিটমাট করে দেয়। কিন্তু তার পরেও কয়েকজন এই নিয়ে ঘোঁট পাকাচ্ছে।’’ কামারপুকুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুদীপ্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘বাসুবাবুর কুষ্ঠ রোগ নয় বলে আমরা দেখেছি।’’

কুয়োয় পড়ে মৃত। জল তুলতে গিয়ে কুয়োয় পড়ে মৃত্যু হল এক গৃহবধূর। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাটি ঘটে চুঁচুড়ার তালডাঙায়। মৃতের নাম মায়া পোদ্দার (৪২)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন সকাল ১১টা নাগাদ স্নানের জন্য জল তুলতে গিয়ে পা পিছলে কুয়োয় পড়ে যান মায়াদেবী। স্থানীয় বাসিন্দারা আওয়াজ পেয়ে ছুটে আসেন। ডাকা হয় পুলিশ, দমকল। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে কুয়োয় মই লাগিয়ে নীচে নেমে মায়াদেবীর দেহ উদ্ধার করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন