প্রতীকী ছবি।
চেম্বার থেকে ‘এমবিবিএস (এএম)’ ডিগ্রি-সহ নিজের নাম লেখা সাইনবোর্ড খুলে, ওষুধপত্র নিয়ে চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন তিনি।
চেনা ডাক্তারের ওই তৎপরতা দেখে সন্দেহ হয় এলাকার লোকজনের। তাঁরা তাঁকে চেম্বারের মধ্যেই আটকে রেখে পুলিশে খবর দেন। শনিবার রাতে হাওড়ার ডোমজুড়ের বেগড়ির গড়বাগান থেকে নকিবুদ্দিন মল্লিক নামে ওই ভুয়ো চিকিৎসককে গ্রেফতার করল পুলিশ। গত কয়েক দিনে হাওড়া গ্রামীণ এলাকা থেকে তিন ভুয়ো চিকিৎসক ধরা পড়লেন।
পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত নকিবুদ্দিন জানিয়েছেন, তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। আদতে নদিয়ার তেহট্টের বাসিন্দা। বছর চারেক হল গড়বাগানে ঘরভাড়া নিয়ে প্র্যাকটিস করছিলেন। যে ভাবে একের পর এক ভুয়ো চিকিসক ধরা পড়ছেন, তাতে ভয় পেয়েই আগেভাগে কেটে পড়ার তাল করছিলেন তিনি। ধৃতের থেকে এখটি লেটারহেড পেয়েছে পুলিশ। সেখানেও তাঁর ডিগ্রি হিসেবে এমবিবিএস (এএম)-এর উল্লেখ রয়েছে।
জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ভুয়ো লেটারহেড ছাপিয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে ওই ব্যক্তিকে ধরা হয়েছে। রবিবার নকিবুদ্দিনকে হাওড়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁকে পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, নকিবুদ্দিন নিজেকে এমবিবিএস ডাক্তার বলেই পরিচয় দিতেন। রোগীদের থেকে দেড়শো টাকা করে ‘ভিজিট’ নিতেন। বিভিন্ন নামী ব্র্যান্ডের ওষুধ লিখতেন প্রেসক্রিপশনে। ‘এমবিবিএস’ ডিগ্রি যে কত ধরনের হতে পারে এই ক’দিনে তা দেখে অবাক হয়ে গিয়েছেন হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তারা। বাউড়িয়া থেকে রামশঙ্কর সিংহ বলে যে ভুয়ো চিকিৎসক ধরা পড়েন, তাঁর লেটারহেড-এ লেখা ছিল এমবিবিএস (বায়োকেমিক), এমডি (বায়োকেমিক)। জগৎবল্লভপুরের বড়গাছিয়া থেকে মতিয়র রহমান মল্লিক নামে যে ভুয়ো চিকিৎসককে ধরা হয়, তাঁর লেটারহেড বলছে, তিনি এমবিবিএস (এইচডি)। তার পরে মিলল নকিবুদ্দিনের লেটারহেড।
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘কেউ মাধ্যমিক, কেউ উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। অথচ বিভিন্ন ধরনের এমবিবিএস ডিগ্রির কথা লেটারহেডে ছাপিয়ে চিকিৎসা করছিলেন তাঁরা। তাঁদের থেকে পাওয়া নথি মেডিক্যাল কাউন্সিলে পাঠানো হয়েছে পরীক্ষার জন্য।’’