মৃত করোনা-যোদ্ধা দেবদত্তা রায়কে উৎসর্গ
Chandannagar

অজানা তথ্য পেতে আর্কাইভ চন্দননগরে

শহরের আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁদের বক্তব্য, এই শহরকে নিয়ে সমস্ত তথ্য সহজেই হাতের সামনে পাওয়ার উপায় এত দিন ছিল না। সেই কারণেই ‘চন্দননগর হেরিটেজ’-এর তরফে প্রশাসনের কাছে আর্কাইভ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়।

Advertisement

তাপস ঘোষ

চন্দননগর শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:১৮
Share:

উদ্যোগ: চন্দননগর পুস্তকাগারে দেবদত্তা রায় আর্কাইভ। —নিজস্ব িচত্র

এক লহমায় হাতের মুঠোয় চলে আসবে চেনা শহরের অজানা ইতিকথা। শহরের ফেলে আসা সময়ের বই, দলিল, মানচিত্র, দুষ্প্রাপ্য ছবি এবং অসংখ্য নথিতে ঠাসা আর্কাইভ গড়ে উঠেছে চন্দননগর পুস্তকাগারে। আজ, মঙ্গলবার ওই আর্কাইভের উদ্বোধন হবে। সম্প্রতি চন্দননগরের মহকুমাশাসক দফতরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট দেবদত্তা রায় করোনা সংক্রমিত হয়ে মারা যান। তিনি এই পুস্তাকাগারে মহকুমাশাসকের প্রতিনিধি ছিলেন। তাঁর স্মৃতিতেই প্রস্তাবিত আর্কাইভের নামকরণ করা হয়েছে।

Advertisement

প্রবীণের স্মৃতিচারণে, বইয়ের পাতায় চন্দননগরের সমৃদ্ধির ইতিহাস, সময়ের নানা পট পরিবর্তনের কথা জানা যায়। স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে এই শহরের বড় ভূমিকা ছিল। বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর নাম চন্দননগরের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে উনবিংশ শতাব্দীর বহু উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক এই শহরে পা রেখেছেন। ভারতবর্ষ স্বাধীন হয় ১৯৪৭ সালে। ফরাসি শাসন থেকে চন্দননগর মুক্তিলাভ করে তার পাঁচ বছর পরে। বর্তমানে এই শহর হুগলি জেলার একটি মহকুমা শহর। দেশি-বিদেশি বহু মানুষ বছরভর এখানে বেড়াতে আসেন। গবেষণার টানেও আসেন অনেকে।শহরের আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁদের বক্তব্য, এই শহরকে নিয়ে সমস্ত তথ্য সহজেই হাতের সামনে পাওয়ার উপায় এত দিন ছিল না। সেই কারণেই ‘চন্দননগর হেরিটেজ’-এর তরফে প্রশাসনের কাছে আর্কাইভ তৈরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েই ওই সংগঠনের সহযোগিতায় এই তথ্যভাণ্ডার গড়ে তোলা হয়েছে। চন্দননগর হেরিটেজের কাছে থাকা ঐতিহাসিক দুষ্প্রাপ্য বহু জিনিস আর্কাইভে ঠাঁই পেয়েছে।

চন্দননগর পুস্তকাগারের গ্রন্থাগারিক সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অজানা নানা তথ্য সকলের সামনে তুলে ধরবে এই আর্কাইভ। চন্দননগর সম্পর্কিত কোনও তথ্য বা পুরনো ছবি কারও কাছে থাকলে এখানে প্রদর্শনীর মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে তা দেখানোর সুযোগ করে দিতে আবেদন জানানো হবে।’’ সোমনাথবাবু জানান, এটিকে ‘ডিজ়িটাল আর্কাইভ’ করারও চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজ্যের গ্রন্থাগার দফতরে আর্জি জানানো হবে। চন্দননগর হেরিটেজের সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এই আর্কাইভ চালুর ফলে গবেষণার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের সুবিধা হবে। দেশ-বিদেশের পর্যটকেরাও সহজে এই শহরের কথা জানতে পারবেন। আগামী দিনে এই আর্কাইভকে ডিজ়িটাল ব্যবস্থায় রূপান্তরিত করে বিশ্বের দরবারে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে।’’ এ শহরের বাসিন্দা ইতিহাসবিদ শুভ্রাংশু রায় বলেন, ‘‘গবেষণার জন্য এমন একটা জায়গার দরকার ছিল। সাধু উদ্যোগ।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন