এই না হলে জীবন, মঞ্চে কল্যাণকে জড়ালেন বাবুল

তখন মঞ্চে বিজেপিকে তোপ দাগছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যেপাধ্যায়। বাবুল সুপ্রিয়-র ‘রোড শো’র গাড়ির মিছিলটা এসে পড়ল তখনই। আচমকা রাস্তা ছেড়ে প্রতিপক্ষ দলের নেতার মঞ্চে উঠে পড়লেন বিজেপি সাংসদ। তার পরে সকলকে চমকে দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তৃণমূল সাংসদকে! খানিক হকচকিয়ে গিয়েও হেসে ফেললেন কল্যাণ। তিনিও জড়িয়ে ধরলেন। বাবুল বললেন, ‘‘রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। সংসদে তো আমাদের দেখা হয়ই। এখানেও দেখা হয়ে গেল। এ সব না থাকলে আর কী রইল জীবনে!’’

Advertisement

গৌতম বন্দ্যেপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:১৮
Share:

রোড- শো’র ফাঁকে হঠাৎই পেয়ে গেল খিদে। ছবি: দীপঙ্কর দে।

তখন মঞ্চে বিজেপিকে তোপ দাগছিলেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যেপাধ্যায়।

Advertisement

বাবুল সুপ্রিয়-র ‘রোড শো’র গাড়ির মিছিলটা এসে পড়ল তখনই।

আচমকা রাস্তা ছেড়ে প্রতিপক্ষ দলের নেতার মঞ্চে উঠে পড়লেন বিজেপি সাংসদ। তার পরে সকলকে চমকে দিয়ে জড়িয়ে ধরলেন তৃণমূল সাংসদকে!

Advertisement

খানিক হকচকিয়ে গিয়েও হেসে ফেললেন কল্যাণ। তিনিও জড়িয়ে ধরলেন। বাবুল বললেন, ‘‘রাজনীতি রাজনীতির জায়গায়। সংসদে তো আমাদের দেখা হয়ই। এখানেও দেখা হয়ে গেল। এ সব না থাকলে আর কী রইল জীবনে!’’ কল্যাণ অভিভূত।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ দৃশ্যে হাততালির ঝড় উঠল মাহেশে। ম্যাড়ম্যাড়ে হুগলির পুরভোটের প্রচারে রং লাগিয়ে দিলেন বাবুল সুপ্রিয়। কল্যাণ বললেন, ‘‘বাবুল প্রাণবন্ত ছেলে। ও যে সৌজন্য দেখাল তাতে আমার ভাল লেগেছে।’’

এত দিন হুগলিতে প্রচারে নামতে দেখা যাচ্ছিল বিভিন্ন দলের জেলা স্তরের নেতাদেরই। এ দিনই প্রথম হেভিওয়েটের দেখা মিলল জেলার রাজপথে। দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে উত্তরপাড়া থেকে শ্রীরামপুর পর্যন্ত রোড শো করলেন বিজেপির গায়ক-সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়।

বাবুলের আসার কথা ছিল বেলা ২টো নাগাদ। আগে থেকে শুধু কর্মী-সমর্থকেরা নন, উত্তরপাড়ার প্যারীমোহন কলেজের সামনে তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন বহু সাধারণ মানুষও। সেই উত্তরপাড়া, যেখানে বাবুলের ছেলেবেলা কেটেছে। বাবুল এলেন ৪টে নাগাদ। কারও কোনও বিরক্তি নেই। নিজের শহর তাঁকে বরণ করল ফুলে-মালায়। সকলের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাবুলের রোড শো শুরু হল জি টি রোড ধরে। সঙ্গে গাড়িতে তাঁর বাবা সুনীলবাবু এবং বাবুলের ছেলেবেলার বন্ধু, উত্তরপাড়ার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মলয় পাণ্ডে।

কিছুটা এগোতেই শহরের দোলতলা। সেখানে গঙ্গার ঘাটে চেনা কয়েক জনের সঙ্গে দেখা। বাবুল থেমে গেলেন। তাঁদের সঙ্গে দু’দণ্ড কুশল বিনিময়ের পরে ফের পথচলা। বাবুলের কথায়, ‘‘ছেলেবেলায় এই ঘাটে কতবার এসেছি। খুব নস্ট্যালজিক লাগছে।’’

হুগলিতে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচারে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। শ্রীরামপুরের মাহেশে চলছিল তৃণমূলের সভা।

সেই সভায় তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে মঞ্চে উঠে পড়েন বাবুল। জড়িয়ে ধরেন কল্যাণকে।

মাইক হাতে নিয়ে বাবুল বলেন, ‘‘রাজনীতি থাকুক রাজনীতির জায়গায়।’’ বাবুলের ব্যবহারে আপ্লুত কল্যাণও।

বৃহস্পতিবার ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।

এর পরে একে একে হিন্দমোটর, কোন্নগরের অলি-গলি, রিষড়া, মাহেশ। বাবুলের গাড়ি এগিয়েছে। সমানে বেজেছে ব্যান্ড। সঙ্গে গড়িয়েছে বহু মোটরবাইকের চাকাও। মাহেশে পৌঁছতেই বাবুলের নতুন কীর্তি। কল্যাণকে আলিঙ্গন।

হিন্দমোটরের নেতাজি সঙ্গের মাঠে এ দিন বাবুলকে দেখার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করছিলেন মৌসুমি সাহা। গায়ককে দেখে তিনি আপ্লুত। তাঁর কথায়, ‘‘এক কাছ থেকে কখনও দেখিনি। এর এককটা অন্য অনুভব রয়েছে।’’ কোন্নগরের অরবিন্দ পল্লির শেলী দাসের কথায়, ‘‘শেষ পযর্ন্ত দেখতে পেলাম। দারুণ লাগল।’’

প্রচারের শুরুতেই প্রথম দিন নজর কাড়লেন গায়ক-সাংসদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন