সাফাই অভিযানের পর পুরনো চেহারায় পান্ডুয়া ব্লক অফিস

শৌচাগার ভর্তি পানের পিকে, ঝুল মেশিনে

দুর্গন্ধের জন্য ব্লক অফিসের শৌচাগারে যাওয়াই দায়। তার ভিতরে জমে রয়েছে নোংরা জল। বেড়েছে মশার উপদ্রব। নোংরায় ভরেছে বেসিন। দেওয়ালে লেগে রয়েছে পান ও পান মশলার পিকের দাগ।

Advertisement

সুশান্ত সরকার

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০৮:১০
Share:

প্রহসন: বিডিও অফিসের শৌচাগারের হাল এমনই। নিজস্ব চিত্র

এলাকা ‘নির্মল’ রাখতে ঢাক পেটাচ্ছে ব্লক অফিস। আর সেই অফিসের মধ্যেই জমে রয়েছে আবর্জনা। অফিসের শৌচাগারে জমেছে মাকড়সার জাল, পড়ে রয়েছে খাবারের উচ্ছিষ্ট। ঘটনাস্থল হুগলির পান্ডুয়া ব্লক অফিস।

Advertisement

বেশি দিন আগের কথা নয়। চলতি বছরের ১২ মে। পান্ডুয়া ব্লকে ওই দিন ঘটা করে পালন করা হয়েছিল নির্মল বাংলা অভিযান। বিডিও, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি-সহ কয়েকজন কর্তা বিডিও অফিস চত্বর ঝাঁট দিয়ে সাফাই করে এলাকা নিয়মিত পরিষ্কার রাখার বার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই অনুষ্ঠানের পরে চার মাস যেতে না যেতেই ছবিটা পাল্টে গিয়েছে।

দুর্গন্ধের জন্য ব্লক অফিসের শৌচাগারে যাওয়াই দায়। তার ভিতরে জমে রয়েছে নোংরা জল। বেড়েছে মশার উপদ্রব। নোংরায় ভরেছে বেসিন। দেওয়ালে লেগে রয়েছে পান ও পান মশলার পিকের দাগ। এ দিক-ও দিক ছড়িয়ে রয়েছে ফেলে দেওয়া ভাত এবং তরকারি। অফিস চত্বরে থাকা বিশুদ্ধ পানীয় জলের যন্ত্রের চারপাশে জমেছে ঝুল।

Advertisement

চলতি বছরের ১২ মে সাফাই অভিযানে সামিল হয়েছিলেন পান্ডুয়ার বিডিও সমীরণ ভট্টাচার্য। নিজস্ব চিত্র

পান্ডুয়া স্টেশন রোড সংলগ্ন এই ব্লক অফিসের আওতায় রয়েছে ১৬টি পঞ্চায়েত। সেই পঞ্চায়েত এলাকাগুলি থেকে মানুষ প্রতি দিনই নানা কাজে ব্লক অফিসে আসেন। ব্লকের কর্তারা আবার সেই পঞ্চায়েতগুলিকে নিজের নিজের এলাকা সাফাই রাখার কথা বলেন। কিন্তু ব্লক অফিসেই উল্টো ছবি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তির ক্ষোভ, ‘‘নিতান্ত প্রয়োজন না হলে আমরা পান্ডুয়া ব্লক অফিসে আসতে চাই না। কারণ অফিসের চারপাশে জমা আবর্জনা এবং ব্যবহারের অযোগ্য শৌচাগার।’’

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতি দখল করেছিল বামেরা। কিন্তু সেটি তারা ধরে রাখতে পারেনি। প্রায় এক বছর আগে তৃণমুল অনাস্থা এনে পঞ্চায়েত সমিতিটি দখল করে। বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডল সভাপতি দেবপ্রসাদ চক্রবর্তীর ক্ষোভ, ‘‘ব্লক অফিসের শৌচাগারে ঢুকলে যে কোনও সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে যাবেন। অথচ এই অফিসে প্রতিদিন কয়েকশো পুরুষ ও মহিলা আসেন।’’ তাঁর দাবি, সামান্য টাকা খরচ করলেই সরকারি অফিসের শৌচাগার পরিষ্কার রাখা সম্ভব। কিন্তু পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসন সেই পরিষেবাটুকু দিতেও ব্যর্থ।

তৃণমূল নেতাদের একাংশও সমস্যার কথা মেনেছেন। স্থানীয় তৃণমূল নেতা মলয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘নির্মল বাংলা প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার র টাকা খরচ করছে। তারপরেও পান্ডুয়া ব্লক অফিসের শৌচাগার অবস্থা শোচনীয়।’’

পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসনের এক কর্তার দাবি, যাঁরা অফিস রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছেন, তাঁদের গাফিলতিতেই এই ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে এর আগে কেউ তাদের কাছে অভিযোগ করেনি। দ্রুত সব সাফাই করে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন