—প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুজো চলাকালীন গ্রামের জমিদারের সঙ্গে মনোমালিন্য হয়েছিল তন্ত্রধারক কেদারনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তার পর বাড়ি ফিরে এসে তিনি সিদ্ধান্ত নেন, নিজের বাড়িতেই দুর্গাপুজো শুরু করবেন। এই ভাবেই শুরু হয় হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির দুর্গাপুজো। সেই পুজো এ বার দেখতে দেখতে ১১২ বছরে পা দিল।
বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রামের জমিদার বাড়িতে সাধারণ মানুষের প্রবেশ প্রায় নিষিদ্ধ ছিল। সেই বিষয়টিই ভাবিয়েছিল কেদারনাথবাবুকে। তিনি নিজের বাড়িতে কালিকাশ্রম তৈরি করেন। সেখানেই শুরু হয় দুর্গার আরধনা। স্থানীয়ভাবে পুজোটি কালিশ্রমের দুর্গাপুজো নামেই পরিচিত। আগের জাঁক হয়তো কিছুটা কমেছে। কিন্তু নিষ্ঠা ও আন্তরিকতা কমেনি একটুও। এই পুজো প্রকৃতই পারিবারিক। পরিবারের ছোট, বড় সবাই পুজোর সময়ে এসে জড়ো হন। পুজো দালানে একসঙ্গে চলে খাওয়াদাওয়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পুজোর তন্ত্রধারক থেকে পুরোহিত সবই পরিবারের। আবার একই সঙ্গে ওই পুজো গোটা গ্রামের উৎসবও বটে।
এই পুজোর সবথেকে বড়ো বৈশিষ্ঠ্য হল এর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য। এলাকার মুসলমান পরিবারের সদস্যরাও এই পুজোয় যোগ দেন। পরিবারের সদস্যরা জানান, পেশায় চিকিৎসক আন্দুলের বাসিন্দা সৈয়দ আসগর নওয়াজ তাঁদের পুজোয় প্রায় প্রতি বছরই গান করতে আসেন।
বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির সদস্য তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়েরা জানান, ২০০৬ সালে তাদের পুজো শতবর্ষ পেরিয়েছে। সেই বছর দুর্গাপুজোর সময়ে এলাকায় বৃক্ষরোপণ, মাজু হাইস্কুল সংস্কার-সহ বিভিন্ন সামাজিক কাজ করা হয়েছিল। বিভিন্ন সময় এই পুজোয় এসেছেন অনেক গুণী মানুষ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সঙ্গীতশিল্পী জগন্ময় মিত্র, চিকিৎসক মহেন্দ্রলাল সরকার প্রমুখ। গত বছর বন্দ্যোপাধ্যায় বাড়ির পুজো এসেছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ।