অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব টাকা প্রৌঢ়াকে ফেরাল ব্যাঙ্ক

পুলিশ ও ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, ফুলমতিদেবীর স্বামী গুলজার চন্দননগর পুরসভায় কাজ করতেন। অবসর নেওয়ার চার বছর পরে তিনি মারা যান। পারিবারিক পেনশন হিসেবে মাসে ৩৩০০ টাকা পান ফুলমতিদেবী। স্বামীর মৃত্যুর পরে উত্তরপ্রদেশে বাপেরবাড়ি চলে যান প্রৌঢ়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দননগর শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:১০
Share:

প্রতীকী ছবি।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে টাকা গায়েব হয়ে গিয়েছিল দুই গ্রাহকের। এক জন ফেরত পেলেন। অন্যজন এখনও দুশ্চিন্তায়।

Advertisement

চন্দননগরের লালদিঘি এলাকার বাসিন্দা ফুলমতি হেলার সংসার চলে পারিবারিক পেনশনের টাকায়। কিন্তু জাল টিপসই দিয়ে প্রায় এক বছরের সেই টাকা ব্যাঙ্ক থেকে কেউ তুলে নিয়েছিল। আতান্তরে পড়েছিলেন প্রৌঢ়া। দ্বারস্থ হয়েছিলেন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ, পুলিশ এবং চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের। অবশেষে বুধবার তাঁর খোয়া যাওয়া ৩৮ হাজার ৭০০ টাকা ফেরত দিল চন্দননগর বড়বাজার এলাকার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কটি। আবার গত মাসেই ডুপ্লেক্স পট্টির অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী অমরনাথ ঘোষের পেনশনের টাকাও গায়েব হয়। অমরনাথবাবুও পুলিশ এবং চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু তিনি এখনও টাকা ফেরত পাননি।

ওই ব্যাঙ্কে বারবার একই ঘটনা কী ভাবে ঘটে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে গ্রাহকদের মনে। চন্দননগর আইনি সহায়তা কেন্দ্রের কর্তাদের ধারণা, ওই ব্যাঙ্কে কোনও জালিয়াত-চক্র সক্রিয়। কেন্দ্রের কর্তা বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই চক্রের হদিস করে তা বন্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। আমি ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যানকেও লিখিতভাবে বিষয়টি জানিয়েছি। ব্যবস্থা নেওয়া না-হলে ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে অভিযোগ জানানো হবে।’’ ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’টি ক্ষেত্রেই সিসিটিভি-র ফুটেজ দেখে আসল ঘটনা উদ্ঘাটনের চেষ্টা চলছে। ব্যাঙ্কের তরফে তদন্ত হচ্ছে। পুলিশকেও জানিয়েছি।’’

Advertisement

কী করে ফুলমতিদেবীর টাকা গায়েব হল?

পুলিশ ও ব্যাঙ্ক সূত্রের খবর, ফুলমতিদেবীর স্বামী গুলজার চন্দননগর পুরসভায় কাজ করতেন। অবসর নেওয়ার চার বছর পরে তিনি মারা যান। পারিবারিক পেনশন হিসেবে মাসে ৩৩০০ টাকা পান ফুলমতিদেবী। স্বামীর মৃত্যুর পরে উত্তরপ্রদেশে বাপেরবাড়ি চলে যান প্রৌঢ়া। বছরে এক-দু’বার চন্দননগরে এসে ব্যাঙ্ক থেকে পেনশনের টাকা তুলে নিয়ে যেতেন। গত বছরের জুলাইতে টিপসই দিয়ে তিনি শেষবার টাকা তুলেছিলেন। চলতি বছরের জুলাইতে ফের টাকা তুলতে এসে ফুলমতিদেবী দেখেন, অ্যাকাউন্টে ৩৮ হাজার ৭০০ টাকা নেই। ব্যাঙ্ককর্মীরা তাঁকে জানান, টিপসই দিয়ে ওই টাকা তোলা হয়ে গিয়েছে।

বিপাকে পড়েন প্রৌঢ়া। আইনি সহায়তা কেন্দ্র ওই ব্যাঙ্কে স্মারকলিপিও দেয়। মঙ্গলবার পুলিশের পক্ষ থেকে ফুলমতিদেবীকে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়। সেইমতো বুধবার ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা ফেরত পান প্রৌঢ়া।

কিন্তু তিনি কবে টাকা ফেরত পাবেন, সেই দুশ্চিন্তাতেই ভুগছেন আর এক গ্রাহক অমরনাথবাবু। পেনশনের টাকা তোলার জন্য তিনি এটিএম কার্ডের আবেদন করেছিলেন। সেইমতো গত ২৮ অগস্ট তিনি কার্ড হাতে পান। কিন্তু সেই কার্ড রেজিস্টেশন করানোর আগেই ৩০ অগস্ট তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ হাজার টাকা গায়েব হয়ে যায় বলে তাঁর অভিযোগ। অমরনাথবাবু বলেন, ‘‘কার্ড হাতে এসেছে। কিন্তু কার্ডের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তার আগেই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চলে গেল? এ কী ভাবে সম্ভব?’’ বৃহস্পতিবারই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত ওই রেলকর্মী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন