দলে কাজিয়া, প্রার্থী নন করবী

তিনি এ বার মনোনয়ন জমা না-দেওয়ায় দলের অন্দরে জল্পনা চলছিলই। সিঙ্গুরের জমি-আন্দোলনের অন্যতম মুখ, বেচারাম মান্নার স্ত্রী করবী ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এ বার পঞ্চায়েত ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৪
Share:

তিনি এ বার মনোনয়ন জমা না-দেওয়ায় দলের অন্দরে জল্পনা চলছিলই। সিঙ্গুরের জমি-আন্দোলনের অন্যতম মুখ, বেচারাম মান্নার স্ত্রী করবী ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি এ বার পঞ্চায়েত ভোটের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।

Advertisement

করবী বর্তমানে হুগলি জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী এবং জেলা পরিষদের সদস্য। গতবার তিনি সিঙ্গুরের গোপালনগর থেকে জিতেছিলেন। এ বার কেন মনোনয়ন জমা দিলেন না? করবীদেবীর বক্তব্য, ‘‘যা বলার দলকেই বলব।’’ রা কাড়তে চাননি তাঁর স্বামীও। তবে, সিঙ্গুরের এক প্রবীণ তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘গতবারের জেতা প্রার্থীদের অনেকেই এ বার টিকিট পাননি। সেই ক্ষোভেই করবী ভোটে লড়লেন না। প্রয়োজনে আমরা কালীঘাটে গিয়ে সব জানাব।’’

সিঙ্গুর এবং লাগোয়া হরিপালে পঞ্চায়েতের টিকিট বণ্টন নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে বেচারাম এবং সিঙ্গুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের মধ্যে আকচা-আকচি চরমে। তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, সিঙ্গুরে মোট ১৬টি পঞ্চায়েতের মধ্যে হরিপাল বিধানসভার তিনটি পঞ্চায়েত পড়ছে। কেজেডি, বলরামবাটি এবং বাসুবাটি। ওই তিন পঞ্চায়েতের টিকিট বিলি নিয়ে দু’পক্ষের মতবিরোধ রয়েছে। বেচারাম যে হেতু হরিপালের বিধায়ক, সে জন্য তাঁর বিধানসভা এলাকার তিনটি পঞ্চায়েতের টিকিট বিলি নিয়ে প্রাথমিক ভাবে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে আলোচনায় তিনি রাজি হননি।

Advertisement

শুক্রবার ধনেখালির বেলমুড়ির একটি কমিউনিটি হলে হুগলির সাংসদ রত্না দে নাগ, উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব এবং ধনেখালির বিধায়ক তথা মন্ত্রী অসীমা পাত্র বৈঠকে বসেন। দলের তরফে হুগলির জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে ওই আলোচনায় কোনও রফাসূত্র না-মেলায় শনিবার ফের বৈঠক হয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই আলোচনায় বরফ কিছুটা গলেছে। রবীন্দ্রনাথ কিছু প্রার্থীর নাম বিবেচনার জন্য বেচারামকে বলেন। বেচারাম সেগুলি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।

কিন্তু এতেও জট পুরোপুরি কাটবে না বলেই মনে করছেন সিঙ্গুরের স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। কারণ, সিঙ্গুরের বাকি ১৩টি পঞ্চায়েতের অনেক জেতা প্রার্থীকে এ বার টিকিট দেওয়া হয়নি। তাঁদের মধ্যে সিঙ্গুর-২ পঞ্চায়েতের বর্তমান প্রধান অরূপ দাস এবং সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ঝর্না রুইদাসও রয়েছেন। প্রার্থী বাছাই নিয়ে জলঘোলার প্রসঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। শনিবার তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে। বেচারাম অবশ্য বলেন, ‘‘যে সব ক্ষেত্রে জটিলতা রয়েছে, দলের জেলা ও রাজ্য নেত়ৃত্বের সঙ্গে কথা বলেই আমরা রফার চেষ্টা করছি।’’ তবে জাঙ্গিপাড়া, পান্ডুয়া, পুড়শুড়া, গোঘাট, খানাকুল-সহ জেলার প্রায় সবর্ত্রই টিকিট বিলি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে ক্ষোভ রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন