তৃণমূল প্রার্থী পৌঁছতেই কালো পতাকা দলের কর্মীদের

ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। সেই অন্দরের ক্ষোভ বাইরেও বেরিয়ে আসছে। হুগলি তার ব্যতিক্রম নয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চণ্ডীতল‌া শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০১৬ ০২:৫৩
Share:

হাতে কালো পতাকা নিয়ে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা। — দীপঙ্কর দে

ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই যেন ক্ষোভ-বিক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলের অন্দরে। সেই অন্দরের ক্ষোভ বাইরেও বেরিয়ে আসছে। হুগলি তার ব্যতিক্রম নয়।

Advertisement

জাঙ্গিপাড়ার দলীয় প্রার্থী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে বুধবার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছিলেন ওই ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দেবদাস বন্দ্যোপাধ্যায়। আর বৃহস্পতিবার চণ্ডীতলার প্রার্থী স্বাতী খোন্দকারের কর্মিসভাকে কেন্দ্র করে একপ্রস্থ নাটক হয়ে গেল। সভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে প্রার্থীকে কালো পতাকা দেখানোর চেষ্টা করলেন দলের বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা। তা দেখে তাঁদের লাঠিসোটা নিয়ে তাড়া করার অভিযোগ উঠল প্রার্থীর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত বিক্ষুব্ধরা মিছিল করলেন। বিক্ষোভও দেখালেন। এই পরিস্থিতিতে দ্বন্দ্বের বিষয়টি লঘু করে দেখাতে তাঁরা সাফাই গাইছেন, ‘বড় দলে ক্ষোভ-বিক্ষোভ স্বাভাবিক। পরে সব ঠিক হয়ে যাবে’— এই বলে। শীর্ষ নেতৃত্ব যতই সাফাই দিক না কেন, দলের একাংশের এই ক্ষোভ ভোট-বাক্সে পড়লে প্রার্থীদের পক্ষে তা স্বস্তিকর হবে না বলে মত দলের অনেক নেতার।

বৃহস্পতিবার বিকেলে চণ্ডীতলার নবাবপুর পঞ্চায়েতের দুধকলমি গ্রামে একটি ভবনে স্বাতীদেবীর কর্মিসভা ছি‌ল। তার কিছুটা আগে নবাবপুর ফুটবল মাঠের সামনে দলেরই বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক কালো পতাকা নিয়ে জড়ো হয়েছিলেন। স্বাতীদেবীর গাড়ি সেখানে পৌঁছতেই কালো পতাকা বের করেন তাঁরা। তৃণমূল সূত্রে খবর, ক্ষোভের বিষয়টি আঁচ করে সঙ্গে সঙ্গেই প্রার্থীর সঙ্গে থাকা লোকজন তাঁদের তাড়া করেন। এর পরে স্বাতীদেবী কর্মিসভা করেন। ঘণ্টাখানেক পরে তিনি ফিরে যান। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ দলের বিক্ষুব্ধ লোকেরা ফের জড়ো হন পঞ্চায়েত দফতরের সামনে। স্বাতীদেবীর বিরুদ্ধেও স্লোগান দিতে থাকেন। পাঁচ বছর তাঁকে এলাকায় দেখা যায়নি এবং উন্নয়ন হয়নি বলে বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ তোলেন। শেখ জাকির হোসেন নামে এক বিক্ষোভকারী বলেন, ‘‘আগের বিধানসভা নির্বাচ‌নে প্রথম ভোট দিয়েছিলাম। ভোট দিয়েছিলাম তৃণমূলকেই। যাঁকে ভোট দিয়েছি, তাঁকে এই প্রথম দেখলাম। তাও বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে।’’ সিরাজ মোল্লা নামে আর এক তৃণমূল সমর্থকের ক্ষোভ, ‘‘সব জায়গায় কিসান মান্ডি হয়েছে। আলো জ্বলেছে। একমাত্র চণ্ডীতলাতেই কিছু হয়নি। রাস্তাঘাটের উন্নতি পর্যন্ত হয়নি। আজ হঠাৎ উনি ভোট চাইতে এলেন। আমরা বিক্ষোভ দেখানোয় লাঠিসোটা নিয়ে তাড়া করা হল।’’ চণ্ডীতলা ১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি ভোলানাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও বিক্ষোভের কথা তো জানি না।’’ উল্টে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্ন করেন, ‘‘কোথাও বিক্ষোভ হয়েছে না কি!’’ এক দিকে তৃণমূল প্রার্থীকে নিয়ে যখন দলের অন্দরে বিতর্ক দানা বাঁধছে, তখন জোটসঙ্গী সিপিএম প্রার্থীকে নিয়ে প্রচার করে কংগ্রেস। এ দিন চণ্ডীতলায় সিপিএম প্রার্থী আজিম আলি গঙ্গাধরপুর পঞ্চায়েতের ঘোজাঘাটা গ্রামে বাড়ি বাড়ি প্রচার করেন। সিপিএম এবং কংগ্রেস দু’দলের কর্মীরাই তাঁর সঙ্গে ছিলেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন