বিস্ফোরণের চোটে উড়ে গিয়েছে ছাদ। ছবি: সুব্রত জানা।
একটি অ্যালুমিনিয়াম চ্যানেল তৈরির কারখানার বয়লার ফেটে মৃত্যু হল পাঁচ জন শ্রমিকের। মঙ্গলবার বিকেলে হাওড়ার সাঁকরাইলের শিল্পতালুকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত হয়েছেন চার শ্রমিক। তাঁদের আলমপুরের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতদের নাম গণেশ যাদব (৫৫), বাড়ি বিহারে। বিশাল কুমার (২৬), বাড়ি বিহারের বৈশালী। অলোকেশ ঢালি (২৬), বাড়ি সাঁকরাইলের ধুলাগড়িতে। সন্দীপ রাউত (৩০), বাড়ি হুগলির হাজিনগরে এবং বিলাস দাস (৩০), বাড়ি পাঁচলার বনহরিশপুরে। দুর্ঘটনায় গণেশ, বিশাল ও বিলাস ঘটনাস্থলেই মারা যান। বাকিদের আশঙ্কজনক অবস্থায় নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মারা যান অলোকেশ ও সন্দীপ। গণেশ ছিলেন কারখানার প্রোডাকশন সুপারভাইজার।
পুলিশ জানিয়েছে, বয়লার ফাটার ঘটনাটি ঘটে এদিন বিকেল ৪টে নাগাদ। এই কারখানায় প্রায় আড়াইশো শ্রমিক কাজ করলেও সপ্তাহখানেক ধরে যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হচ্ছিল। ফলে কারখানার উৎপাদন বন্ধ ছিল। জনা পনেরো শ্রমিক এ দিন রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করছিলেন। বিস্ফোরণের সময়ে হতাহতেরা কাজ করলেও বাকিরা বিকেলের জলখাবার খেতে গিয়েছিলেন। বয়লারটির ভিতরের চ্যানেলকে তাপ (হিট) দিয়ে শক্তপোক্ত করার সময়েই প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয়।
বিস্ফোরণের আওয়াজে আশপাশের কারখানা থেকে শ্রমিকেরা ছুটে আসেন। বিস্ফোরণের চোটে অ্যালুমিনিয়াম চ্যানেল তৈরির ওই কারখানার বয়লারের উপরের অংশের ছাদ চৌচির হয়ে যায়। প্রথমে স্থানীয় শ্রমিকেরাই উদ্ধারের কাজে হাত লাগান। পরে পুলিশ আসে কারখানা থেকে হতাহতদের উদ্ধার করে নার্সিংহোমে পাঠায়। বয়লার বিস্ফোরণের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন কারখানা কর্তৃপক্ষ, সাঁকরাইল ব্লক এবং হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের কর্তারা।
কী ভাবে বিস্ফোরণ ঘটল তা এখনও জানা যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। সন্দীপ রানা নামে কারখানারই এক শ্রমিক বলেন, ‘‘আমি জলখাবার খেতে গিয়েছিলাম। প্রচণ্ড শব্দ শুনে ছুটে আসি। দেখি বয়লার য়েখানে চিল সেই জায়গাটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।’’
দুর্ঘটনার পরেই কারখানা চত্বর থেকে বিদ্যুৎ সংযোগ চলে যায়। এর ফলে উদ্ধারকাজ চালাতে অসুবিধা হয় পুলিশের।