বোর্ড গঠন নিয়ে সংঘর্ষ শ্যামপুরে

গোটা ঘটনার দায় বিজেপি-র উপরেই চাপিয়েছে শাসকদল। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় বিজেপি তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করেছে। অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি নেতাদের দাবি, ওই গোলমাল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্যামপুর শেষ আপডেট: ২৮ অগস্ট ২০১৮ ০০:১২
Share:

তাণ্ডব: পুলিশের দিকে ছোড়া হচ্ছে বোমা। ছবি: সুব্রত জানা

পঞ্চায়েত বোর্ড গঠনকে ঘিরে রাজ্যের নানা প্রান্তে রাজনৈতিক অশান্তি শুরু হয়েছে। বাদ গেল না হাওড়ার শ্যামপুরও। সোমবার সেখানকার ধান্ধালি পঞ্চায়েতের কাছে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ল তৃণমূল ও বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। চলে ইট নিয়ে লড়াই। দু’পক্ষের কয়েকজন জখম হন। বোমাবাজিও হয়। পুলিশ গিয়ে লাঠি চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। গ্রেফতার করা হয় ছ’জনকে।

Advertisement

গোটা ঘটনার দায় বিজেপি-র উপরেই চাপিয়েছে শাসকদল। তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, বিনা প্ররোচনায় বিজেপি তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করেছে। অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি নেতাদের দাবি, ওই গোলমাল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল।

ওই পঞ্চায়েতে মোট আসন ১৭। তৃণমূল পেয়েছে ১০টি, বিজেপি ছ’টি এবং নির্দল একটি। এ দিন সেখানে বোর্ড গঠন হয়। আগের রাত থেকেই পঞ্চায়েত ভবনের বাইরে শিবির করে বসেছিলেন বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। বহু তৃণমূল কর্মী-সমর্থকও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে ছিলেন। অশান্তির আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয়েছিল প্রচুর পুলিশ। বোর্ড গঠনের সময়ে প্রধান পদে তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। ১১-৬ ভোটে প্রধান পদে তৃণমূল জিতে যায়। এরপরে উপপ্রধানের পদে বিজেপি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেনি। প্রধান, উপপ্রধান পঞ্চায়েত অফিস থেকে বেরিয়ে আসার সময়েই গন্ডগোল শুরু।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রধান-উপপ্রধানকে শিবির থেকে বিজেপি কর্মীরা কটূক্তি করে এবং তাঁদের দিকে ইট ছোড়ে বলে অভিযোগ। পুলিশ শিবির তুলে দিয়ে বিজেপি কর্মীদের হটিয়ে দেয়। তারা তখন প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মোহিনী মোড়ে চলে যায়। সেখানে তারা তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে মারপিটে জড়ায়। দু’পক্ষ পরস্পরের দিকে ইট ছুড়তে থাকে। বোমা পড়ে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠি চালিয়ে এলাকা ফাঁকা করে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচ জন বিজেপি এবং এক তৃণমূল সমর্থককে গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে।

কিন্তু কেন গোলমাল? প্রধান পদে জেতার সম্ভাবনা না-থাকা সত্ত্বেও বিজেপি কর্মীরা কেন শিবির করে বসেছিলেন?

তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি, তাঁদের কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে জোট করে বিজেপি ওই পঞ্চায়েতটি দখলের পরিকল্পনা করেছিল। সেই কারণে বিজেপি কর্মীরা বিজয়োৎসব করার জন্য আগে থেকে শিবির করে বসেছিল। ব্যান্ড এবং তাসাপার্টিও আনা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই তৃণমূল সদস্যেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে যাওয়ায় বিজেপির পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। এ কথা স্বীকার করেছেন কিছু বিজেপি কর্মীও।

বিজেপির হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক অবশ্য ওই পরিকল্পনার কথা মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘এই সংঘর্ষ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। তাতে আমাদের কেউ জড়িত নয়। পুলিশ অকারণে আমাদের পাঁচ জনকে ধরেছে।’’ তৃণমূলের গ্রামীণ জেলা সভাপতি তথা উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলক রায় পাল্টা বলেন, ‘‘আমাদের দলে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। গোলমাল পাকানোর জন্যই নির্লজ্জের মত বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা জমায়েত হয়েছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন