দীর্ঘদিন ধরেই সেতুর অবস্থা খারাপ ছিল। সম্প্রতি সেতুর একটি স্তম্ভে ফাটল ধরায় তার উপর দিয়ে সমস্ত রকমের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। এই অবস্থায় ঝিখিরা-হাওড়া রুটে রাউতাড়া সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সপ্তাহে পূর্ত ও সড়ক দফতরের কাছে খবর আসে সেতুটি বসে গিয়েছে। পূর্ত ও সড়ক দফতরের বাস্তুকাররা সেতুটি পরিদর্শন করে তুতে যান চলাচলের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। দফতরের এক কর্তা জানান, সেতুর একটি স্তম্ভে ফাটল ধরেছে। এ ছাড়া সেতুর নীচে যে লোহার পাত রয়েছে বহু জায়গাতেই তা সেতুর থেকে ছেড়ে গিয়েছে। ফলে ভারী যানবাহন তো বটেই, এমনকী ছোট যান চলাচলও বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
সেতুর এক দিকে জয়পুর। সেই প্রান্তে সেতুর কাছেই একটি মাঠ রয়েছে। যানবাহন সেই পর্যন্ত এসে থেমে যাচ্ছে। কারণ সেতু বন্ধ থাকা সেগুলি ঝিখিরা বাসস্ট্যান্ড বা সুচিঘাটা পর্যন্ত যাতায়াত করতে পারছে না। লোকজনকে হেঁটে সেতু পার হয়ে ফের এ প্রান্ত থেকে অন্য যানবাহনে গন্তব্যে পৌঁছতে হচ্ছে। ‘কাটা সার্ভিস’-এর ফলে যেমন হয়রান হতে হচ্ছে তেমনই খরচও বেশি হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৯৮০ সালে সেতুটি তৈরি করে পূর্ত ও সড়ক দফতর। ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে কয়েক বছর ধরেই সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়েছিল। দিন কয়েক আগে সেতুর একটি স্তম্ভ বসে যায়। সেতুর নীচের লোহার পাতও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পারাপার বিপজ্জনক হয়ে পড়ে। অথচ এই সেতু দিয়ে হা়ওড়া-ঝিখিরা, সুচিঘাটা-করুণাময়ী-সহ কয়েকটি রুটের বাস, লরি ও অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে। এমনকী হুগলির খানাকুল, রাজহাটি, জয়রামবাটি, হরিরচক, শাবলশিংহপুর-সহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষও এই রুটে যাতায়াত করেন। প্রশাসনের নির্দেশে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়ে গিয়েছেন যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, যাত্রীদের যাতায়াতের স্বার্থে সেতুর দেখভাল করার কথা প্রশাসনের। তাতে যে তাদের গাফিলতি ছিল বর্তমান অবস্তাই তার প্রমাণ। ঝিখিরার বাসিন্দা সমর ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ রায় বলেন, ‘‘সেতুতে বাস, ট্রেকার, অটো চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ টাকা অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে যাতাযাতের জন্য। তার উপর হয়রানি। এর নামই কী উন্নয়ন?’’
তাঁদের আরও অভযোগ, অবিলম্বে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটি সেতু সারানোর বদলে সেতুতে গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেই দায় সেরেছে প্রশাসন। যদিও পূর্ত ও সড়ক দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে, যত দ্রুত সম্ভব সেতুটি সারতে পদক্ষেপ করা হবে।