স্মরণে: বুধবার বিকেলে ভদ্রেশ্বরে। নিজস্ব চিত্র
ঠিক এক বছর আগে গুলিতে খুন হন ভদ্রেশ্বরের তৎকালীন পুরপ্রধান মনোজ উপাধ্যায়। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি করে দোষীদের সাজার দাবিতে বুধবার শহরে মোমবাতি মিছিল হল। কালো ব্যাজ পড়ে ‘কালা দিবস’ পালন করা হল।
গত বছরের ২১ নভেম্বর রাতে স্থানীয় ক্লাব থেকে মোটরসাইকেলে চেপে ফেরার সময় বাড়ির কাছেই জিটি রোডের উপরে খুন হয়ে যান মনোজ। আততায়ীদের আটটি গুলি তাঁর শরীর ঝাঁঝরা করে দেয়। প্রথমে চন্দননগর কমিশনারেট তদন্ত শুরু করলেও পরে সিআইডি তদন্তভার হাতে নেয়। মূল অভিযুক্ত, ভদ্রেশ্বর পুরসভারই নির্দল কাউন্সিলর রাজু সাউ সহ-সহ মোট ১২ জন গ্রেফতার হয়। সিঙ্গুরে জঙ্গল থেকে ধৃতদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল, অস্ত্র উদ্ধার হয় বলেও পুলিশের দাবি। ৯০ দিনের মধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি। আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। মামলার অন্যতম সরকারি আইনজীবী মুক্তিকান্ত মুখোপাধ্যায় জানান, এখনও পর্যন্ত ৩ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। মাসখানেক আগে ধৃত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। বাকিরা জেলে।
মনোজের মৃত্যু বার্ষিকীতে বুধবার শহরের গেটবাজারে তাঁর নামে একটি কমিউনিটি হলের শিলান্যাস হয়। ভবনটির জন্য পুরসভা এবং স্থানীয় বিধায়ক ইন্দ্রনীল সেনের বিধায়ক তহবিলের ৫৮ লক্ষ টাকা বর্াদ্দ হয়েছে। পুরপ্রধান প্রলয় চক্রবর্তী, উপ-পুরপ্রধান প্রকাশ গোস্বামী-সহ অন্যান্যরা উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন।
বিকেলে ভদ্রেশ্বর শহর তৃণমূলের ডাকে পুরভবনের সামনে থেকে মোমবাতি মিছিল শুরু হয়। পুরপ্রধান, উপ-পুরপ্রধান-সহ একাধিক কাউন্সিলর মিছিলে যোগ দেন। কয়েকশো মানুষও সামিল হন। মিছিল শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরে। মিছিলকারীরা দাবি তোলেন, অবিলম্বে সাক্ষীপর্ব শেষ করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। সুখিয়াদেবী নামে এক মহিলা বলেন, ‘‘মনোজের মতো এক জন চেয়ারম্যানকে নৃশংসভাবে খুন করা হল। উনি এলাকার উন্নয়ন করছিলেন। মানুষের আপদে-বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। ভেবেছিলাম তাড়াতাড়ি খুনিদের সাজা হবে। কিন্তু শুনছি, মামলা শেষ হতে এখনও অনেক সময় লাগবে।’’ শহর তৃণমূল সভাপতি প্রশান্ত মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘উন্নয়নের ধারাকে রুখে দেওয়ার জন্যই মনোজবাবুকে খুন করা হয়। আমরা চাই ব দোষীদের শাস্তি হোক।’’
পুলিশ সূত্রের বক্তব্য, চন্দননগর আদালতের ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে মামলা চলছে। কাস্টডি ট্রায়াল (অভিযুক্তদের জেলে রেখে সাক্ষ্যগ্রহণ) হচ্ছে। ঠিকঠাক ভাবেই তো মামলা এগোচ্ছে। রাজ্যের এক পুলিশ-কর্তা বলেন, ‘‘অভিযুক্তরা গ্রেফতার হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। দ্রুত চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে বিচার চলছে।’’ সরকারি আইনজীবী মুক্তিনাথবাবুও বলেন, ‘‘বিচারবিভাগীয় প্রক্রিয়া অনুযায়ী মামলা চলছে। যথাসময়েই তা শেষ হবে।’’