হুগলির ডানকুনিতে বিস্কুট তৈরির একটি কারখানায় নির্বাচনে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-কে হারিয়ে দিল সিটু। জেলা জু়ড়ে বিভিন্ন পর্যায়ের নির্বাচনে ভরাডুবির মাঝে এই জয়ে সিটু তথা সিপিএম নেতৃত্ব খুশি।
ডানকুনির জগন্নাথপুরে দিল্লি রোডের ধারে ‘গ্যাঞ্জেস ভ্যালি ফুড প্রোডাক্টস’ নামে ওই কারখানাটি তৈরি হয়েছিল বাম আমলে। বর্তমানে এখানে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচশো শ্রমিক রয়েছেন। বরাবরই এখানে সিটুর প্রাধান্য ছিল। তারাই ছিল কারখানার ‘সোল বার্গেনিং এজেন্ট’ (যে সংগঠন শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা, দাবিদাওয়া বা অন্যান্য সমস্যা নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালায়)। চার বছর অন্তর ‘সোল বার্গেনিং এজেন্ট’ নির্বাচন হয়।
শুক্রবার সেই নির্বাচন ছিল। কারখানা সূত্রের খবর, মোট ভোটার ছিলেন ২৮৪ জন। ভোট পড়ে ২৮৩টি। সিটু ১১৮টি ভোট পায়। আইএনটিটিইউসি পায় ১০৩টি ভোট। বাকী ৬২টি ভোট পায় কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন ইএনটিইউসি। ফলে আগামী চার বছরের জন্য সিটুই সোল বার্গেনিং এজেন্টের দায়িত্ব সামলাবে।
ডানকুনির সিটু নেতা জগন্নাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ওই কারখানায় ধারাবাহিক ভাবে শ্রমিক স্বার্থে আমরা লড়াই করছি। ফলে শ্রমিকদের উপর সিটুর প্রভাব রয়ে গিয়েছে। ষড়যন্ত্র করেও ওরা আমাদের হারাতে পারেনি।’’
আইএনটিটিইউসি নেতৃত্বের বক্তব্য, আগের বার তাঁরা মাত্র ৫৯টি ভোট পেয়েছিলেন। এ বার তা দ্বিগুন হয়েছে। সংগঠনের জেলা নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বামেরা বেছে বেছে ওই কারখানায় লোক নিয়েছিল। সুখের কথা, ওঁদের মধ্যে অনেকেই আমাদের দিকে এসেছেন। পরের বার নিশ্চয়ই আমরাই জিতব।’’ অন্বয়বাবুর অভিযোগ, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীকরণ হচ্ছে না। ২৪০ দিনের কম উপস্থিতি হলে শ্রমিকদের বেতন থেকে টাকা কেটে নেওয়া হয়। এ সব নিয়ে সিটু নিশ্চুপ। মালিকপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ওরা শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী কাজ করেছে।’’
এ ব্যাপারে জগন্নাথবাবুর বক্তব্য, ‘‘শুধু ওই কারখানা কেন, সারা রাজ্য বা দেশেও ঠিকা-শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ আমাদের অন্যতম প্রধান দাবি। যারা বলছেন, আমরা শ্রমিক স্বার্থের পরিপন্থী তাঁরা ঠিক বলছেন না।’’