পরিচালন সমিতিকে অধ্যক্ষ জানিয়েছিলেন ব্যক্তিগত কারণে তিনি পদত্যাগ করছেন। যদিও কাজের ক্ষেত্রে ট্রাস্টি বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে মতবিরোধেই যে তিনি পদত্যাগ করছেন তা নিয়ে গুঞ্জন ছিল কলেজে। এমনকী ছাত্রছাত্রীদের একাংশ অধ্যক্ষ যাতে কলেজ না ছাড়েন সেই দাবিতে স্মারকলিপি দেন। পরিচালন সমিতির সদস্য তপন মণ্ডলের অভিযোগ ছিল, ‘‘ট্রাস্টের অন্যায় খবরদারি বরদাস্ত করতে না পেরেই পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন অধ্যক্ষ।’’ তবে বৃহস্পতিবার পরিচালন কমিটির সভাপতিকে চিঠি দিয়ে নিজের পদত্যাগপত্র ফিরিয়ে নিতে চেয়েছেন ওই অধ্যক্ষ।
গত ১ অগস্ট কামারপুকুর সারদা বিদ্যা মহাপীঠ-এর অধ্যক্ষ তারকনাথ রায় পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। সভাপতি পরেশনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ এক বছরের লিয়েন নিয়ে আরামবাগের নেতাজি মহাবিদ্যালয় থেকে এখানে এসেছিলেন। ফের সেখানে ফিরতে চেয়ে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন।”
কলেজ সূত্রে খবর, আরামবাগের নেতাজি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যাপক তারকবাবু লিয়েন নিয়ে অধ্যক্ষ হিসাবে এসেছিলেন কামারপুকুর কলেজে। ট্রাস্টি বোর্ড তাঁকে কলেজ পরিচালন কমিটির সম্পাদক হিসাবেও নিয়োগ করে। কিন্তু নানা বিষয়ে তাঁর সঙ্গে ট্রাস্টি বোর্ডের কর্তাদের মতবিরোধ দেখা দেয়। গত ২৯ জুলাই ট্রাস্টের সম্পাদক নির্মাল্য মুখোপাধ্যায় কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করে সাত দিনের মধ্যে জবাব চেয়ে তাঁকে শোকজ করেন। এটা মেনে নিতে না পেরে পুরনো কলেজে ফিরে যাওয়ার কথা জানিয়ে পদত্যাগ করেন অধ্যক্ষ। গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ আমাকে জানিয়েছেন, তিনি কাজ চালিয়ে যেতে চান। কিন্তু কলেজে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে তাঁর পক্ষে আর কাজ করা সম্ভব নয়।’’ বিষয়টি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে জানানো হবে বলে বিধায়ক জানান।
বৃহস্পতিবার উচ্চ শিক্ষা দফতর এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরা যৌথভাবে কলেজে তদন্তে আসেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দেবকুমার পাঁজা বলেন, “ট্রাস্টের সঙ্গে অধ্যক্ষর মতবিরোধ নিয়ে উচ্চ শিক্ষা দফতর এবং বিশ্ববিদ্যালয় যৌথ তদন্ত করেছে। তবে এখনও চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।” অধ্যক্ষ তারকবাবু বলেন, “উচ্চ শিক্ষা দফতর এবং বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক দল তৎপরতার সঙ্গে বিষয়টা দেখছেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমাকে কলেজে থেকে যেতে বলেছেন। তাই পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করতে চেয়ে পরিচালন কমিটির সভাপতিকে চিঠি দিয়েছি।”