Coronavirus Lockdown

করোনার থাবায় বেসামাল শিব-দুর্গারা

আগের থেকে বর্তমানে এই পেশায় রোজগার কমে গিয়েছে, কিন্তু পেশা বদল করেননি অনেকেই।

Advertisement

দীপঙ্কর দে

তারকেশ্বর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০১:৪৬
Share:

স্মৃতি: এই ছবি আবার ফিরবে কবে, প্রশ্ন। —ফাইল ছবি

সারা বছর শিব, কালী, দুর্গা সেজে মানুষের মনোরঞ্জন করেন ওঁরা। পথেঘাটে ঘুরে বেড়ানো সেই সব বহুরূপীদের মানুষ ভক্তিভরে প্রণামীও দেন। সেটাই সম্বল নুন আনতে পান্তা ফুরনো ওই বহুরূপীদের। লকডাউনের আবহে সেই দেব-দেবীর বেশধারীদের সংসারেও অভাবের হাল স্পষ্ট।

Advertisement

তারকেশ্বর রেল গেটের পাশ দিয়ে তারকেশ্বর-বৈদ্যবাটী রোডকে ঠিক বাঁ-দিকে রেখে তাকালেই চোখ পড়বে, একটি ঢালাই রাস্তা সোজা নেমে গিয়েছে। সেই রাস্তা দিয়ে কিছুটা গেলেই তারকেশ্বর পুরসভার ১১ ওয়ার্ডের ভিতরই জ্যোৎশম্ভু গ্রাম। অনেকে আবার এই গ্রামকে বহুরূপী গ্রাম নামেই চেনেন। কয়েক দশক ধরে বংশপরম্পরায় বহুরূপী পেশাতেই কাজ করেন এমন ৩৫ থেকে ৪০ টি পরিবার এই গ্রামেই থাকেন।

আগের থেকে বর্তমানে এই পেশায় রোজগার কমে গিয়েছে, কিন্তু পেশা বদল করেননি অনেকেই।

Advertisement

প্রতিদিন সকালে সূর্য উঁকি দিলেই ওঁরা সবাই রং তুলি নিয়ে বসে পড়েন। কেউ সাজেন কালী, কেউ শিব, কেউ পার্বতী আবার কেউ সাজেন বাবা লোকনাথ। সাজ শেষ হতেই সন্ধ্যে পর্যন্ত টানা ভিক্ষা করেন ওঁরা। সারাদিনের সেই সংগ্রহ দিয়েই কোনওক্রমে চলে অভাবের সংসার।

কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন সব বন্ধ। মানুষজন বাইরে বের হতে পারছেন না। অফিসও সব বন্ধ। তার ফলে রোজগারে টান পড়েছে তাঁদের।

বহুরূপী পেশাতেই দীর্ঘদিন ধরে অছেন দীপঙ্কর হালদার ও সোমনাথ চক্রবর্তীরা। তাঁরা বলেন, ‘‘আমাদের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। গ্রামের কারও রোজগার নেই। সরকারি বা বেসরকারি কোনও সংস্থাই আমাদের খোঁজ এ পর্যন্ত নেননি। মাঝে মধ্যে নানা এলাকায় চাল, ডাল, আলু বিলি করা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে সেই সব সংগ্রহ করেই কোনওক্রমে চলছে। এই ভাবে আর কতদিনই বা সংসার চলবে তাও আমরা জানি না।’’

কেন রেশন মেলে না ?

জবাব আসে, কয়েকজনের রেশন কার্ড রয়েছে। তারা চাল-ডাল পায়। কিন্তু অনেকেই এই এলাকার বাসিন্দা না হওয়ায় তাঁদের রেশন কার্ডই নেই।

তারকেশ্বর পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন সামন্ত বলেন, ‘‘আমরা পুরসভার তরফে শীঘ্রই ওই গ্রামে যাব। ওদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা নিশ্চয় করা হবে।’’

এখন দেখার পুরপ্রধানের আশ্বাস কতটা মেলে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন