Coronavirus

করোনা আক্রান্তের দেহ সৎকারে বিক্ষোভ, নিগ্রহ

ওই বিক্ষোভের পরেই চুল্লিতে তালা ঝুলিয়ে দেন শ্মশান কমিটির সম্পাদক তাপস নন্দী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২০ ০৩:২১
Share:

প্রতীকী ছবি।

গোটা আরামবাগ মহকুমায় একমাত্র বৈদ্যুতিক চুল্লি রয়েছে খানাকুলের ঘাঘরপুরে ঘন্টেশ্বর মন্দির সংলগ্ন শ্মশানে। বৃহস্পতিবার সেখানে দাহ করা হয় আরামবাগের করোনা আক্রান্ত এক বৃদ্ধার মৃতদেহ। এ কথা জানাজানি হতেই শুক্রবার দিনভর বিক্ষোভ দেখালেন গ্রামবাসী। শ্মশান কমিটির সম্পাদককে নিগ্রহের অভিযোগও উঠল। যার জেরে ওই সম্পাদক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলেন।

Advertisement

ওই বিক্ষোভের পরেই চুল্লিতে তালা ঝুলিয়ে দেন শ্মশান কমিটির সম্পাদক তাপস নন্দী। ফলে, শনিবার বিকেল পর্যন্ত অন্তত ১২টি মৃতদেহ সেখান থেকে ফিরিয়ে নিয়ে যেত হয় শ্মশানযাত্রীদের। বিক্ষোভকারীদের দাবি মেনে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাপস-সহ শ্মশানের মোট ৯ জন কর্মীকে গোঘাটের সরকারি কোয়রান্টিন শিবিরে পাঠানো হয়। ওই দেহ সৎকারের পরেই পুরো এলাকা স্যানিটাইজ় করে দমকল। তাতেও অবশ্য গ্রামবাসীর ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, শ্মশানটি জনবহুল এলাকায়। অথচ, তাঁদের অন্ধকারে রেখে করোনা আক্রান্তের মৃতদেহ দাহ করা হল। এতে বিপদের আশঙ্কা বাড়ল। আর কোনও করোনা আক্রান্তের দেহ ওই চুল্লিতে দাহ করা যাবে না, এমন দাবিও উঠেছে। তাপস অর্থের বিনিময়ে ওই কাজ করেছেন, এই অভিযোগ তুলে বিক্ষোভকারীদের এক জন বলেন, ‘‘ওঁদের লালরস পরীক্ষার রিপোর্টে যদি করোনা নেগেটিভ আসে, তবেই এখানে ঢুকতে দেওয়া হবে। সে কথা ওঁদের জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

অর্থের বিনিময়ে ওই কাজের অভিযোগ অস্বীকার করে তাপসের দাবি, ‘‘যাঁর দেহ সৎকার হয়েছে, তিনি যে করোনা আক্রান্ত ছিলেন, তা জানা ছিল না। আমাদের কেউ বলেননি। মহকুমা প্রশাসনের নির্দেশমতো আমরা শুধু দেহ দাহ করতে আসা লোকজনের হাতে চুল্লির চাবি তুলে দিয়েছি। আমরা কেউ ওখানে যাইনি। তা সত্ত্বেও আমাকে নিগ্রহ করা হল।’’

ওই মৃতদেহের ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাঁকেও কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি করেছেন খানাকুল-১ পঞ্চায়েতের প্রধান গৌতম হাজরা। তিনি বলেন, ‘‘মনে হয়, ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এলাকার জনপ্রতিনিধি এবং গ্রামবাসীদের আগাম সচেতন করলে বা প্রচার করলে সুবিধা হত।”

তাপস-সহ ৯ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে বলে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, “সমস্ত রকম সতর্কতা নিয়েই দেহ দাহ হয়েছে। বিষয়টা নিয়ে সরকারি সমস্ত স্তর থেকে গ্রামবাসীদের বোঝানো চলছে। সমস্যা থাকবে না।”

গত মঙ্গলবার আরামবাগের কোভিড হাসপাতালে ওই বৃদ্ধা মারা যান। যকৃৎ বিকল হওয়া-সহ নানা রোগে তিনি ভুগছিলেন। জ্বর, সর্দি-কাশি ও শ্বাসকষ্ট প্রবল হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। বৃদ্ধার মৃত্যুর পরে তাঁর লালরসের নমুনা পরীক্ষায় করোনা পজ়িটিভ আসে বলে মহকুমাশাসক জানিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকালে খানাকুলের ওই চুল্লিতে দেহটি দাহ হওয়ার পর থেকেই দু’টি ব্লকে ক্ষোভ জমছিল। শুক্রবার বিক্ষোভের কথা জানতে পেরে পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা ঘটনাস্থলে যান। তাঁরাই তাপসকে উদ্ধার করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement