পাশে-আছি: বসিরহাটে। নিজস্ব চিত্র
কারও মা নিখোঁজ। কারও বাবা দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার পরে পড়াশোনায় দাঁড়ি পড়ার মতো অবস্থা। কারও পরিবারের নুন আনতে পান্তা ফুরোয় দশা।
এমনই কয়েকশো শিশুকে বই-খাতা-কলম-পোশাক দিয়ে পড়াশোনার মূল স্রোতে বেঁধে রাখার চেষ্টা করলেন সিরহাট পুরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাজমিন সুলতানা। পুরসভা থেকে পাওয়া সাম্মানিকের পুরো টাকা-সহ চাঁদা তুলে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৯৯৫ জন শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে নানা সরঞ্জাম।
বসিরহাটের ত্রিমোহণী এলাকায় থাকেন নুরুল ইসলাম মণ্ডল। তাঁর এক ছেলে সিরাজ মাস আটেক আগে পথ দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছেন। বছর দু’য়েক ধরে নিখোঁজ সিরাজের স্ত্রী আজমিরা। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে বড়জন জুনায়েত পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। দ্বিতীয় শ্রেণির পড়ুয়া জেয়ামিন। জুবাইত শিশু শ্রেণিতে পড়ে। ছোট্ট জারিফার বয়স মাত্র দু’বছর। বাবা-মা হারা চার শিশুকে মানুষ করার দায়িত্ব পড়েছে দাদু নুরুলের উপরে। নুরুল বলেন, ‘‘সংসারে সামান্য আয়। এই অবস্থায় নাতি-নাতনিদের পড়াশোনা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। কাউন্সিলরের এই সাহায্য অনেকটা কাজে লাগবে।’’
ত্রিমোহণী, সাহাপাড়া, দালালপাড়া, খাঁপাড়া, কলোনিপাড়া, তপারচর-সহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকার দুঃস্থ শিশুদের এনে শনিবার ত্রিমোহণীতে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। হাজির ছিলেন বাদুড়িয়ার বিধায়ক আব্দুর রহিম দিলু, বীরভূমের হাসন কেন্দ্রের বিধায়ক মিল্টন রসিক, অমিত মজুমদার, বাবু গাজি-সহ অনেকে। উদ্যোক্তাদের পক্ষে বাবু বলেন, ‘‘গত আট বছর ধরে এমন উদ্যোগ করছেন কাউন্সিলর।’’ নাজমিনের কথায়, ‘‘বাবা-মাকে হারিয়ে টাকার অভাবে যাতে ছেলেমেয়েগুলোর পড়াশোনা বন্ধ হয়ে না যায়, সেই চেষ্টাটুকু চালিয়ে যাচ্ছি।’’