জীর্ণ চুল্লিতে বন্ধ শবদাহ, দুর্ভোগ বালিতে

স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, চাপ সামলাতে না পারার কারণেই যদি বৈদ্যুতিক চুল্লিটিতে যান্ত্রিক সমস্যা হয়ে থাকে, তবে আরও একটি কেন তৈরি হচ্ছে না?

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৯ ০১:৪০
Share:

তিরিশ বছরেও পরিকাঠামো বাড়েনি শ্মশানের। নিজস্ব চিত্র

শরীরে লুকিয়ে একাধিক সমস্যা। সেই রোগের কারণে মাঝেমধ্যেই ‘শয্যা’ নিতে হয়। চাপ নিতে না পেরে নাভিশ্বাস ওঠার এমন অবস্থা বালির পাঠকঘাট শ্মশানের একমাত্র বৈদ্যুতিক চুল্লিটির।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রশ্ন, চাপ সামলাতে না পারার কারণেই যদি বৈদ্যুতিক চুল্লিটিতে যান্ত্রিক সমস্যা হয়ে থাকে, তবে আরও একটি কেন তৈরি হচ্ছে না? তাঁদের দাবি, বছরখানেক আগে বালির ওই শ্মশানে ঢোকার দু’ধারের রাস্তা থেকে পুরসভার সাফাইকর্মীদের বসতি তুলে দেওয়া হয়েছে। তখন পুর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিলেন, সৌন্দর্যায়নের পাশাপাশি বালিতে দ্বিতীয় বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরি হবে। কিন্তু তা হয়নি।

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, বালি এলাকার ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠকঘাট শ্মশানে সারা দিনই শবদাহ চলে। বালি-বেলুড়-লিলুয়া পুর এলাকার পাশাপাশি বালি পঞ্চায়েত এলাকা, হুগলির ডানকুনি, জনাই থেকেও এখানে দাহ করতে আসেন মানুষ। উত্তরপাড়ার শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি বন্ধ থাকলে সেখানকার চাপও নিতে হয় বালিকে। স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, এক এক সময়ে দাহের জন্য লম্বা লাইন পড়ে যায়। এমনও ঘটে যে সকালে দাহ করতে গিয়ে রাতে ফিরতে হয়। বছরে প্রায় ২৫০০-এর মতো শবদাহ হয় বলে জানাচ্ছে পুরসভা।

Advertisement

তৎকালীন বালি পুরসভা ১৯৮৯ সালে বৈদ্যুতিক চুল্লিটি তৈরি করে। ২০১৫-র শেষে হাওড়া পুরসভার সঙ্গে বালি সংযুক্ত হওয়ার পরেই পাঠকঘাট শ্মশানের উন্নয়নে জোর দেন পুর কর্তৃপক্ষ। ২০১৮ সাল নাগাদ শ্মশানের সৌন্দর্যায়ন করে পুরসভা। প্রাক্তন মেয়র পারিষদ (শ্মশান) শ্যামল মিত্র বলেন, ‘‘পাঠকঘাটে দ্বিতীয় চুল্লি তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। সেই সময়ে পুরবোর্ড ভেঙে যাওয়ায় কাজ এগোয়নি।’’

বাসিন্দাদের দাবি, তিরিশ বছরের পুরনো চুল্লিটি জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছে। এর জন্য চুল্লি ভেঙে শবদেহ নীচে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে এখানে। এক পুর আধিকারিক জানান, যে কোনও বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করতে ৬৭৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা প্রয়োজন। ওই চুল্লির কয়েল মাঝেমধ্যেই খারাপ হয়ে যায়। এ জন্য তাপমাত্রা ৪০০-৪৫০ ডিগ্রির বেশি রাখা যাচ্ছে না। ফলে দাহ হতে বেশি সময় লাগছে। পুর কর্তৃপক্ষ জানান, ভিতরে মোট ১২টি কয়েল থাকে।

মে মাসেই কয়েক দিন চুল্লিটি বন্ধ করে তিনটি কয়েল বদলানো হয়েছিল। চলতি মাসে ফের সমস্যা দেখা দেওয়ায় পরিষেবা বন্ধ রেখে চুল্লির অন্য তিনটি কয়েল বদলানো হয়েছে। ধোঁয়া যে যন্ত্রের মাধ্যমে শোধন হয়, তার অবস্থাও তথৈবচ। দীর্ঘ দিন ধরে সেটিও বেহাল হয়ে পড়ে।

হাওড়ার পুর কমিশনার তথা প্রশাসক মণ্ডলীর চেয়ারম্যান বিজিন কৃষ্ণ বলেন, ‘‘আপাতত মেরামতি করে কাজ চালানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। পরবর্তী পর্যায়ে আরও একটি চুল্লি করা যায় কি না, তা নিয়েও চিন্তাভাবনা রয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন