চন্দননগরেও ডেঙ্গির থাবা

গোন্দলপাড়া এলাকাটি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ে। সেখানকার পূর্বতন কাউন্সিলর, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজেশ জয়সোয়ারা পুর কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গি প্রতিরোধে উদাসীন বলে অভিযোগ তুলেছেন।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০১৮ ১২:১৪
Share:

উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুরের পর এ বার চন্দননগরেও হানা দিল ডেঙ্গি।
জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রস্তুতিতে শহরের সর্বত্র এখন তুমুল ব্যস্ততা। তার মধ্যেই মশাবাহিত এই রোগ নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। গোন্দলপাড়া মালোপাড়ার শ্রমিক মহল্লার বাসিন্দা প্রেমনারায়ণ ঠাকুর সদ্য ডেঙ্গিতে ভুগে সেরে উঠেছেন। তাঁর স্ত্রী রাধিকারও ডেঙ্গি হয়েছিল। ছেলে রাজু ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে কলকাতার মানিকতলা ইএসআই হাসপাতালে এখনও ভর্তি।
চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালেও ডেঙ্গি রোগী ভর্তি রয়েছেন। বাড়ছে জ্বরের রোগীর সংখ্যাও। হাসপাতালের সুপার জগন্নাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘উৎসবের মরসুম শুরুর আগে থেকেই প্রচুর জ্বরের রোগী আসছেন। বর্তমানে চার জন ডেঙ্গি রোগী ভর্তি রয়েছেন। আগে কয়েকজন ডেঙ্গি রোগীকে কলকাতার হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, শহরের অন্তত ছ’টি ওয়ার্ডে (১১, ১২, ২৫, ২৬, ৫ এবং ৬) ডেঙ্গি থাবা বসিয়েছে। হচ্ছে জ্বরও। ওই সব ওয়ার্ডের অনেকের অভিযোগ, পুরসভা এলাকার ময়লা পরিষ্কারের ক্ষেত্রে সব সময় সতর্ক নয়। তার জেরেই এ বার ডেঙ্গি মাথাচাড়া দিল। পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু অভিযোগ মানেননি। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি প্রতিরোধে পুরসভার তরফে বিশেষ টিম তৈরি করে প্রতিরোধে নামা হয়েছে। পুরসভা সতর্ক নজর রাখছে।’’ পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের অফিসার সন্দীপ ঘোষ বলেন, ‘‘জ্বর বেশি ছড়িয়েছিল পুজোর আগে। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে। নিয়ন্ত্রণে ডেঙ্গিও।’’
উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুরে ডেঙ্গি এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট পুর কর্তৃপক্ষের। কিন্তু চন্দননগরের তা কবে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন বাসিন্দারা। শহরের শ্রমিক মহল্লার সঙ্গে বস্তি এলাকায় ডেঙ্গির উপদ্রব সবচেয়ে বেশি। লালদিঘির ধার, উর্দিবাজার, জেলেপাড়া, রাধানাথ শিকদার লেন-সহ বিভিন্ন এলাকায় জ্বর ছড়িয়েছে। পুরসভার টিন বাজারের স্বাস্থ্যকেন্দ্র-সহ বিভিন্ন জায়গায় জ্বর পরীক্ষার জন্য এ পর্যন্ত অন্তত ১৬৫টি ‘কিট’ ব্যবহার করা হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
গোন্দলপাড়া এলাকাটি ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে পড়ে। সেখানকার পূর্বতন কাউন্সিলর, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজেশ জয়সোয়ারা পুর কর্তৃপক্ষ ডেঙ্গি প্রতিরোধে উদাসীন বলে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ডেঙ্গি কেন হবে না? গোন্দলপাড়া শ্রমিক মহল্লা বরাবর উপেক্ষিত। ডেঙ্গি ছড়ানোর পর এখন কর্তাদের টনক নড়েছে। এলাকা পরিষ্কার করা হচ্ছে। আগে থেকে সাবধান হওয়া উচিত ছিল।’’
রাজ্য সরকার পুরবোর্ড ভেঙে দেওয়ার আগে পর্যন্ত চন্দননগর পুরসভার স্বাস্থ্য বিভাগের মেয়র-ইন-কাউন্সিল ছিলেন পার্থ দত্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরাও শহরের কিছু এলাকায় ডেঙ্গি ছড়ানোর খবর পাচ্ছি। পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগে বলে, জঞ্জাল পরিষ্কারের বিশেষ ব্যবস্থা করেছি। মশা মারার তেল ছড়ানোর ব্যবস্থা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন