নোংরা জলে ভাসছে এলাকা, কাঠগড়ায় রেল

রেল লাইন সম্প্রসারণ করতে গিয়ে মাটি চাপা দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরসভার নিকাশি পাইপলাইন। তার ফলে সেই নোংরা জল খালে গিয়ে পড়ার বদলে ভাসিয়ে দিয়েছে হাওড়া পুরসভার চারটি ওয়ার্ড।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:৩৩
Share:

নিকাশির জল উপচে এমনই হাল। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার।

রেল লাইন সম্প্রসারণ করতে গিয়ে মাটি চাপা দিয়ে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরসভার নিকাশি পাইপলাইন। তার ফলে সেই নোংরা জল খালে গিয়ে পড়ার বদলে ভাসিয়ে দিয়েছে হাওড়া পুরসভার চারটি ওয়ার্ড। রেলের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছে রেল লাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। বিক্ষোভে সামিল হন কয়েক জন কাউন্সিলরও। প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ চলার পরে রেলের তরফে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়, এলাকার নিকাশি অবস্থা আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এর পরে অবরোধ ওঠে। তবে এর জেরে পাঁচ জোড়া লোকাল ট্রেন বাতিল হয়। স্টেশনে ঢুকতে-বেরোতে দেরি করে ছ’টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেন।

Advertisement

ঘটনাটি ঠিক কী? হাওড়া পুরসভা সূত্রে খবর, সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দু’ধারে যে ওয়ার্ডগুলি রয়েছে, সেগুলির নিকাশির জল মূলত জমা হয় সাঁতরাগাছি রেল সেতুর নীচে একটি ঝিলে। ওই ঝিলটিকে স্থানীয় বাসিন্দারা সাঁতরাগাছি ‘ব’ বলেন। বর্ষায় ঝিলের জল বেড়ে গেলে একটি নিকাশি নালার মাধ্যমে বাড়তি জল রেল লাইনের নীচ দিয়ে গিয়ে পড়ে ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডের নিকাশি নালায়। সেখান থেকে বড় নর্দমার মাধ্যমে তা গিয়ে মেশে গঙ্গায় সংযোগকারী পচা খালে।

গত কয়েক মাস ধরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সাঁতরাগাছি-শালিমার টার্মিনালের লাইন সম্প্রসারণের জন্য রেলের নয়ানজুলি মাটি ফেলে বোজানো হচ্ছে। পুরসভার অভিযোগ, ইতিমধ্যেই নয়ানজুলির প্রায় এক-চতুর্থাংশ বুজে তো গিয়েছেই। পাশাপাশি, সাঁতরাগাছি সেতুর নীচের ঝিলটির জল বেরোনোর জন্য যে দু’টি পাইপলাইন ছিল, সেগুলিও প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাটি চাপা পড়ে। ফলে নিকাশির নোংরা জল উপচে গিয়ে ঢুকে পড়েছে ৪৪, ৪৫, ৪৭ এবং ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকাগুলিতে।

Advertisement

উল্লেখ্য, এর আগে সাঁতরাগাছি স্টেশন সম্প্রসারণের সময়ে পাশের একটি ঝিল বোজানো নিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের সঙ্গে পুরসভার বিবাদ গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। পুর কর্তারা অভিযোগ করেছিলেন, রেল জলা জমি বুজিয়ে এলাকার নিকাশি সমস্যা বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশও দূষিত করছে। পরে অবশ্য আদালতের নির্দেশেই রেল ফের কাজ শুরু করে।

এ বার সেই রেলেরই কাজের প্রভাব সরাসরি নিকাশি ব্যবস্থার উপরে পড়ায় তাদের বিরুদ্ধে কার্যত খড়্গহস্ত হাওড়া পুরসভার কর্তারা। প্রতিবাদে এ দিন স্থানীয় বিধায়ক জটু লাহিড়ীর নেতৃত্বে কয়েক জন কাউন্সিলর ও তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা সাঁতরাগাছি ও রামরাজাতলা স্টেশনের মাঝে রেল লাইন অবরোধ করেন। তবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ অফিসার সঞ্জয় ঘোষ পুরকর্তাদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থার কোনও ক্ষতি হবে না। রেলের তরফে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই সময় মতো নেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন