রাখির সকালে পৌঁছল দিদির মৃত্যুসংবাদ

মেদিনীপুরের বাসিন্দা অরুণের সঙ্গে চামরাইল মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা হোসিয়ারি ব্যবসায়ী সুখলাল পাইনের মেয়ে সুপর্ণার বিয়ে হয় ২০০৭ সালে। তাঁদের দু’টি সন্তানও রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৮ ০২:৩২
Share:

দুই সন্তানের সঙ্গে। নিজস্ব চিত্র

প্রতি বছরের মতো এ বারেও দিদির কাছ থেকে রাখি পরার প্রতীক্ষায় ছিলেন লিলুয়ার চামরাইলের বাসিন্দা সুরজিৎ পাইন। কিন্তু সেই অপেক্ষাই সার। রাখির সকালেই খবরটা এসে পৌঁছল বাড়িতে, দিদি সুপর্ণা জানা আত্মহত্যা করেছেন। যদিও সুপর্ণার মৃত্যুকে কোনও ভাবেই আত্মহত্যা বলতে নারাজ তাঁর বাপের বাড়ির পরিজনেরা। ভাই সুরজিতের অভিযোগ, তাঁর দিদিকে খুন করে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। লিলুয়া থানায় জামাই অরুণ জানা এবং সুপর্ণার শাশুড়ি ও ভাসুরের বিরুদ্ধে অভিযোগও দায়ের করেছেন সুপর্ণার পরিজনেরা।

Advertisement

পরিবার সূত্রের খবর, মেদিনীপুরের বাসিন্দা অরুণের সঙ্গে চামরাইল মণ্ডলপাড়ার বাসিন্দা হোসিয়ারি ব্যবসায়ী সুখলাল পাইনের মেয়ে সুপর্ণার বিয়ে হয় ২০০৭ সালে। তাঁদের দু’টি সন্তানও রয়েছে। বড় মেয়ে স্বপ্নার বয়স সাত বছর। ছোট ছেলে অঙ্কুশের বয়স পাঁচ। পরিবারের দাবি, মেয়ের বিয়ের পরে জামাইকে হোসিয়ারি ব্যবসার জন্য টাকা দিয়েও সাহায্য করেছিলেন সুপর্ণার বাবা। এমনকি মেয়ে-জামাইয়ের জন্য চামরাইলে বাড়িও করে দিয়েছিলেন তাঁরা। সপরিবার অরুণ ছাড়াও সে বাড়িতে থাকতেন অরুণের মা এবং দাদা। সুরজিতের অভিযোগ,

ব্যবসার জন্য টাকা এবং বাড়ি করে দেওয়ার পরেও নিয়মিত বাপের বাড়ি থেকে টাকা চেয়ে আনতে চাপ দেওয়া হত সুপর্ণাকে। এমনকি এ জন্য তাঁর উপরে শারীরিক অত্যাচারও চলত বলে অভিযোগ।

Advertisement

মেয়ের মৃত্যুতে প্রায় বাকরুদ্ধ সুখলালবাবু। শনিবার রাতেই তিনি মেয়েকে বাড়িতে নিয়ে আসার জন্য ছেলে সুরজিৎকে বারবার বলেছিলেন। সেটাই এখন আফশোস সুরজিতের। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছর তো রাখির দিন সকালেই দিদি চলে আসত। সে কারণেই আর আনতে যাইনি। বাবাকে বলেছিলাম, কালই তো দিদি চলে আসবে। এখন মনে হচ্ছে কেন নিয়ে এলাম না? তাহলে তো এত বড় অঘটন ঘটত না।’’ পরিবারের প্রশ্ন, অত্যাচার তো অনেক দিন ধরেই চলছিল! সকালেই যেখানে আসার কথা মেয়েটার, সেখানে কেন এমন কাজ করবেন সুপর্ণা? এ দিকে দিদির মৃত্যুর খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে ছুটে যান সুরজিৎ। জানতে পারেন, রাখির দিন সুপর্ণা বাপের বাড়িতে যাক, এমনটা চাননি তাঁর স্বামী। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে প্রবল অশান্তিও হয়। পরিজনেদের দাবি, কেন সুপর্ণাকে আসতে বাধা দেওয়া হল? এই সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হোক।

পরিবারের অনুমান, সুপর্ণাকে খুন করে ঝুলিয়ে দিয়ে পুরো ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে সাজানো হয়েছে। ইতিমধ্যেই লিলুয়া থানায় অরুণ-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এর পরেই আটক করা হয়েছে অরুণকে। পুলিশ জানিয়েছে, অরুণকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন