সিঙ্গুরের এই বাড়িতেই চলত হোম। নিজস্ব চিত্র
কোনও হোমে কচিকাঁচাদের কী ভাবে রাখতে হবে, তা নিয়ে সরকারি নিয়ম রয়েছে। কিন্তু সিঙ্গুরের একটি হোমে সেই নিয়ম মানা হচ্ছে না, এই অভিযোগে সেখানকার ১১টি শিশুকে শুক্রবার হুগলি শিশু সুরক্ষা দফতর অন্যত্র স্থানান্তরিত করল। হোম নিয়ে অভিযোগ রয়েছে গ্রামবাসীরও।
অভিযোগ মানতে চাননি ‘সবুজানন্দ মিশন’ নামে বেসরকারি ওই হোমের সম্পাদিকা লক্ষ্মী দাসপাত্র। তাঁর দাবি, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতর একতরফা ভাবে বাচ্চাদের অন্যত্র সরিয়ে দিল। সরকারি নিয়ম মাফিক পরিকাঠামো তৈরির কাজ করা হচ্ছিল।’’
জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই হোমে জুভেনাইল জাস্টিস আইন লঙ্ঘিত হচ্ছিল। হোম কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয় অনেকদিন আগে। কিন্তু পরিকাঠামোর কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। তাই ব্যবস্থা নেওয়া হল।’’ একই কথা বলেন সিঙ্গুরের বিডিও প্রণব মণ্ডলও।
সিঙ্গুরের মির্জাপুর-বাঁকিপুর পঞ্চায়েতের দক্ষিণ মামুদপুর এলাকায় ২০০৫ সালে হোমটি চালু হয়। পাঁচ থেকে থেকে ১৫ বছর বয়সী ১২ জন সেখানে থাকত।
স্থানীয় স্কুলে তারা পড়াশোনা করত। এদের মধ্যে একজন অবশ্য লক্ষ্মীদেবীরই সন্তান। হোমের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, পানীয় জলের সমস্যা-সহ নানা অভিযোগ নিয়ে গ্রামবাসীরা প্রশাসনের নানা মহলে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বিধি অনুযায়ী ছেলে-মেয়েদের আলাদা ঘরে রাখার কথা। কিন্তু ওই হোমে সেই পরিকাঠামো ছিল না।
বাচ্চাদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখা হচ্ছিল। ফলে, শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। মূলত অনাথ ও পরিত্যক্ত শিশুদেরই ওই হোমে রাখার কথা। কিন্তু অনেক সময় ‘ক্রেশ’-এর মত করে হোমটি ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
শুক্রবার দুপুরে পুলিশ, বিডিও-র প্রতিনিধি এবং জেলা শিশু সুরক্ষা দফতরের অফিসারেরা ওই হোমে যান।
সেখান থেকে পাঁচটি ছেলেকে কামারকুণ্ডুর একটি হোমে এবং ছ’টি মেয়েকে চন্দননগরের একটি হোমে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তাঁরা।