ফাইল চিত্র
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারিই সার। তৃণমূলের মূল এবং যুব সংগঠনের সংঘর্ষ যেন থামতেই চাইছে না পুরশুড়ায়। মঙ্গলবার দুপুর থেকে দুই সংগঠনের বিক্ষিপ্ত অশান্তির পর রাতে গুলি চলল ঘোলদিগরুতে। বাঁ পায়ের উরুতে গুলি লেগেছে যুব কর্মী শেখ মঞ্জুর আলির। আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাতেই তৃণমূলের মূল সংগঠনের দুই নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম শেখ মনতাজুল এবং আবু হুড়াই। তাঁদের বুধবার আরামবাগ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় দিগরুইঘাট থেকে রাত ১০টা নাগাদ বাড়ি ঘোলদিগরুই ফিরছিলেন স্থানীয় যুব নেতা শেখ রসিদ ওরফে গোপাল এবং তাঁর ছায়াসঙ্গী শেখ মঞ্জুর আলি। ঘোলদিগরুই বটতলার কাছে তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয় বলে অভিযোগ। যুব নেতা শেখ রসিদের দাবি তাঁকে লক্ষ্য করেই গুলি চালানো হয়েছিল, গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে মঞ্জুরের লাগে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুর পুরশুড়ার চিলাডাঙি পঞ্চায়েতে ডাকা সাধারণ সভা গিয়ে তৃণমূলের দুই সংগঠনের মধ্যে মারামারি হয়। তার পর থেকেই চিলাডাঙি এবং সংলগ্ন শ্যামপুর পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামগুলো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
ঘটনায় যুব সংগঠনের তুহিনা বেগম সরকার নামে এক পঞ্চায়েত সদস্যা মূল সংগঠনের পঞ্চায়েত সদস্য রমজান আলি লস্করের বিরুদ্ধে অভব্য আচরণের অভিযোগ দায়ের করেন পুলিশ।
রমজান আলি লস্করের পাল্টা অভিযোগ করেন, “দলের যুব সংগঠনের সদস্যরা আমাদের পঞ্চায়েতের সাধারণ সভায় ঢুকতে না দিয়ে মারধর করেছে। তার জেরে বিকেলে বারাসাত গ্রামে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষও হয়।’’ পুলিশ যাওয়ার আগেই মূল সংগঠনের কর্মীরা মার খান বলে অভিযোগ। তারই পাল্টা ঘোলদিগরুই গুলির হামলা।
চিলাডাঙি অঞ্চলের মূল সংগঠনের নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য রমজান আলি লস্কর বলেন, “মূল সংগঠনের কর্মীরা আর কত মার খাবে! উপরতলার নেতারা কিছু ব্যবস্থা নিচ্ছেন না। বাধ্য হয়েই হয়তো কিছু কর্মী প্রতিরোধের রাস্তায় নেমেছেন।” তাঁর দাবি, এ বিষয়ে তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হচ্ছেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণার পর থেকেই পুরশুড়ায় তৃণমূলের দুই সংগঠনের সংঘর্ষের বিরাম নেই। ঘোলদিগরুইতে গুলির লড়াই এই প্রথম নয়। এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারিও যুবনেতা শেখ রসিদ ওরফে গোপালের দিকে গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে মূল সংগঠনের আবু হুড়াই, শেখ মনতাজ-সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে। সে সময় তলপেটে গুলি লেগে শেখ রসিদ কলকাতার হাসপাতালে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন ছিলেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। দলের তরফেও অসীমা পাত্র বিষয়টি দেখে প্রয়োজনীয়
ব্যবস্থা নেবেন।”
অসীমা অবশ্য জানিয়েছেন, “দলের মধ্যে কোন অশান্তি বরদাস্ত করা হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।”