উদয়নারায়ণপুর

চিনি পাব না কেন, রাগে খুন

গত মাসে ডিজিটাল রেশন কার্ডে অসঙঅগতি নিয়ে রায়না-১ ব্লক অফিসে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে বোমাবাজিতে নিহন হন এক সিপিএম কর্মী। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ বার সেই কার্ডের সুবিধা পাওয়া নিয়ে খুনোখুনি দেখল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর।

Advertisement

মনিরুল ইসলাম

শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৬ ০২:০৫
Share:

শোকার্ত জয়ন্তর পরিবার। ছবি: সুব্রত জানা।

গত মাসে ডিজিটাল রেশন কার্ডে অসঙঅগতি নিয়ে রায়না-১ ব্লক অফিসে স্মারকলিপি দিয়ে ফেরার পথে বোমাবাজিতে নিহন হন এক সিপিএম কর্মী। অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এ বার সেই কার্ডের সুবিধা পাওয়া নিয়ে খুনোখুনি দেখল হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর। এ বার খুন হলেন তৃণমূল কর্মী এক সিভিক ভলান্টিয়ার। অভিযুক্তও তৃণমূল কর্মী।

Advertisement

মঙ্গললবার রাতে উদয়নারায়ণপুরের নজরখান গ্রামে যাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয়, সেই জয়ন্ত সাঁতরার (২৪) পরিবার ইতিমধ্যেই ডিজিটাল রেশন কার্ড পেয়েছে। যাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ, তিনিও সিভিক ভলান্টিয়ার। জয়ন্তের প্রতিবেশী বাপ্পা পণ্ডিত। তাঁর পরিবারেরও ডিজিটাল রেশন কার্ড হয়েছে। কিন্তু দু’টি কার্ড দু’রকম। জয়ন্তর পরিবার পেয়েছে বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত (এসপিএইচএইচ) কার্ড। এতে চাল-গমের সঙ্গে চিনিও পাওয়ার কথা। বাপ্পার পরিবার পেয়েছে সুবিধাপ্রাপ্ত কার্ড (পিএইচএইচ)। সেই কার্ডে শুধু চাল-গম পাওয়ার কথা। এ নিয়ে জয়ন্ত ও বাপ্পার মধ্যে গোলমাল চলছিলই। সেই বিবাদই এ দিন গড়াল খুন পর্যন্ত।

মঙ্গলবার রাত ৯টা নাগাদ জয়ন্ত ক্লাবে বাবার সঙ্গে টিভি দেখছিলেন। বাপ্পা সেখানে পরিবারের লোকজন নিয়ে হাজির হয়। সেখানে জয়ন্ত ও তাঁর বাড়ির লোকের নামে গালিগালাজ করতে থাকে। জয়ন্তের জেঠতুতো দাদা কালীপদ প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাপ্পার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। অভিযোগ, তাঁকে মারধর করেন বাপ্পা ও তাঁর ভাই। তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে যান জয়ন্ত এবং তাঁর বাবা নবকুমারবাবু। অভিযোগ, বাপ্পা এবং তাঁর পরিবারের লোকেরা কালীপদকে ছেড়ে জয়ন্তের উপরে চড়াও হন।

Advertisement


জনতার রোষ। ভাঙচুর করা হয়েছে বাপ্পা পণ্ডিতের বাড়ি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুশ্রুষার জন্য কালীপদকে যখন এক দিকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তখনই ধারাল অস্ত্র দিয়ে বাপ্পা জয়ন্তকে কোপাতে থাকে। গ্রামবাসীরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে জয়ন্তকে মৃত ঘোষণা করা হয়। গ্রাম ছেড়ে বাপ্পা ও তাঁর পরিবারের লোকেরা পালায়। গ্রামবাসী এবং নিহতের বাড়ির লোকেরা এর পরেই বাপ্পাদের বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। দমকল গিয়ে আগুন নেভায়।

জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন জানান, অভিযুক্তদের ধরতে তল্লাশি চলছে। জয়ন্তই ছিলেন পরিবারের একমাত্র রোজগেরে। তাঁকে হারিয়ে মা হারাদেবী বলেন, ‘‘কার্ডের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। তবু কেন মরতে হল আমার ছেলেকে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement