রূপরেখা: ডুমুরজলা স্পোর্টস কমপ্লেক্সের প্রস্তাবিত নকশা। প্রস্তাবিত পেভার ব্লক বসানো রাস্তা। সৌজন্য: হাওড়া পুরসভা
দীর্ঘ বছরের প্রতীক্ষা এবং একের পর এক শিলান্যাস। তবু হাওড়ার এই ‘মরূদ্যানে’র উন্নয়নে একটিও ইট পড়েনি। অবশেষে নড়তে চলেছে সেই অচলায়তন। ঘিঞ্জি শহর হাওড়ার এক টুকরো ‘মরূদ্যান’ ডুমুরজলা ময়দানের সৌন্দর্যায়ন শুরু করেছে হাওড়া পুরসভা।
অভিযোগ, দখলদারের ভিড়ে ক্রমে হারিয়ে যাচ্ছিল সেই ডুমুরজলা ময়দান। অথচ ৫৪ একরের এই ময়দান ও তার সবুজ ঘিরে ৪০ বছরে উন্নয়নের টোপ দেখিয়ে একাধিকবার শিলান্যাস হয়েছে। মাস্টার প্ল্যান করতে খরচ হয়েছে লক্ষাধিক টাকা। তবু তৈরি হয়নি স্পোর্টস কমপ্লেক্স। এ বার ডুমুরজলা ময়দানের হারানো গৌরব ফেরাতে দায়িত্ব নিয়েছে হাওড়া পুরসভা।
ডুমুরজলা ময়দানের চার ধারে দখল হয়ে থাকা দখলদার সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। বাজার তুলে দেওয়া হয়েছে। পুরসভা সূত্রের খবর, দখলদারের পুনর্বাসনের জন্য ময়দানের পূর্ব দিকে তৈরি হবে মার্কেট কমপ্লেক্স। দখলদার হটানোর পাশাপাশি ময়দানের চার ধারে ভগ্নপ্রায় কংক্রিটের রাস্তা সংস্কার শুরু হয়েছে। ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের বেলেপোলের কাছে রাস্তার এক ধারে যেমন পেভার ব্লক বসানো হয়েছে তেমনই তিন রঙের ব্লক বসানো হবে ডুমুরজলা ময়দানের চার ধারের রাস্তা জুড়ে। ইতিমধ্যেই রাস্তার দু’ ধারে সিমেন্টের কার্ভ চ্যানেল বসানো শুরু হয়েছে। এর পরে সাদা বালি ফেলে পেভার ব্লক বসানো হবে।
মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ডুমুরজলা ময়দান ঘিরে অনেক বড় পরিকল্পনা রয়েছে। কয়েক ধাপে সে কাজ শেষ হবে। এখন চলছে প্রথম ধাপ। মাঠের চার ধার সাজিয়ে তোলার পরে মাঠে ৪০-৫০ হাজার আসনের একটি আন্তর্জাতিক স্তরের স্টেডিয়াম তৈরিতে হাত দেওয়া হবে।’’ তিনি জানান, কাজ শেষ হলে পরিকল্পিত রিং রোড ঘিরে থাকবে মা-মাটি-মানুষ পার্ক, থাকবে ছ’ হাজার আসন বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মানের একটি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। স্টেডিয়ামের ভিতরে হেলিপ্যাড তো আছেই। ফলে কয়েক বছরের মধ্যেই বদলে যাবে হাওড়ার ছবি।
পুরসভা সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে স্থির হয়েছে ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে তৈরি হবে একটি তোরণ। অন্য তোরণটি হবে উত্তরে ড্রেনেজ ক্যানাল রোডের মোড়ে। এখন বেলেপোলের দিকে দক্ষিণ-পশ্চিম কোণে যে জায়গায় বাস-গ্যারাজ এবং ঝুপড়ি রয়েছে সেখানে তৈরি হবে মুক্ত মঞ্চ-সহ বিনোদন পার্ক। এ ছাড়া রাস্তার দু’ ধারে থাকবে বাগান, ফোয়ারা। শিশুউদ্যান ও খেলার মাঠ। বয়স্কদের জন্যেও পার্ক থাকবে সেখানে।
মাঠের দক্ষিণে যে জলাশয় আছে সেটি সংস্কার করে বোটিং-এর ব্যবস্থা করা হবে, থাকবে ঝুলন্ত জেটিও। পাশাপাশি অন্য জলাশয়েরও সৌন্দর্যায়ন হবে। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের জন্য ১০-১২ ফুট চওড়া ফুটপাথ থাকবে। তার ধারে থাকবে বিভিন্ন জাতের অর্কিড ও ফুলগাছ। ডুমুরজলা ঘিরে এ ভাবেই সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে হাওড়া পুরসভা।