বধূ খুনের অভিযোগে স্বামী-শাশুড়ি ধৃত

বাপেরবাড়ি থেকে পণের টাকা এনে না দেওয়ায় এক গৃহবধূকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাঁর স্বামী এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার আগে দু’জনকেই উত্তমমধ্যম দেয় জনতা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের রায়ঘাটের কাছে এনএন রায় স্ট্রিটে। মৃতার নাম বর্ষা পাল (২৪)। ধৃতদের নাম অন্তু এবং শুভ্রা পাল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৭ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩০
Share:

বধূর মৃত্যুতে বিক্ষোভ পড়শিদের। ছবি: প্রকাশ পাল।

বাপেরবাড়ি থেকে পণের টাকা এনে না দেওয়ায় এক গৃহবধূকে খুন করে দেহ ঝুলিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তাঁর স্বামী এবং শাশুড়িকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তার আগে দু’জনকেই উত্তমমধ্যম দেয় জনতা। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুরের রায়ঘাটের কাছে এনএন রায় স্ট্রিটে। মৃতার নাম বর্ষা পাল (২৪)। ধৃতদের নাম অন্তু এবং শুভ্রা পাল।

Advertisement

তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানান, এ দিন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মৃতার দেহের ময়না-তদন্ত হয়। সব দিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে। ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে। ধৃতদের আজ, সোমবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হবে। তদন্তকারীদের দাবি, জেরায় ধৃত অন্তু জানায়, এ দি‌ন ভোরে স্ত্রীর সঙ্গে তার ঝামেলা হয়। তিনি স্ত্রীকে জানান, তাঁর সঙ্গে আর সংসার করা সম্ভব হয়। তাঁকে কটূ কথাও বলেন। এর পরেই বর্ষা আত্মঘাতী হন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, অন্তু শ্রীরামপুরে মাছ বাজারে একটি দোকানে হিসেব রাখার কাজ করেন। প্রথম স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে বছর পাঁচেক আগে তার সঙ্গে রিষড়ার নতুনগ্রামের বাসিন্দা বর্ষার বিয়ে হয়। তাঁদের সাড়ে তিন বছরের একটি ছেলে আছে। প্রথম স্ত্রীকে খুনের অভিযোগে অন্তুকে হাজতবাসও করতে হয়। মৃতার বাপেরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, অন্তু এবং বর্ষার প্রেম ছিল। বিয়েতে অন্তু কোনও যৌতুক নেয়নি। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বর্ষার উপরে অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। পণ হিসেবে বাপেরবাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য বর্ষাকে চাপ দেওয়া হতো। কিন্তু আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় তাঁরা তা দিতে পারেননি। সেই কারণে বর্ষার উপর অত্যাচারের মাত্রা বাড়ে।

Advertisement

শনিবার স্ত্রীকে না জানিয়ে অন্তু ছেলেকে রিষড়ায় মামাবাড়িতে রেখে আসেন। তা নিয়ে দু’জনের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর পরেই স্বামী ও শাশুড়ি মিলে বর্ষাকে খুন করে শোওয়ার ঘরে গলায় গামছার ফাঁস দিয়ে দেহ ঝুলিয়ে দেন বলে অভিযোগ। রবিবার সকালে পড়শিরা ওই বাড়ির সামনে ভিড় করেন। শুরু হয় বিক্ষোভ। ক্ষিপ্ত প্রতিবেশীরা অভিযোগ করতে থাকেন, প্রথম স্ত্রীকে অন্তু খুন করেছিল। হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। মৃতার স্বামী ও শাশুড়িকে জনতার হাতে তুলে দেওয়ার দাবি ওঠে। হাতের নাগালে পেয়ে তাঁদের মারধর করে বিক্ষোভকারীরা। কয়েকশো লোকের ভিড়ে সামনের রাস্তা কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থি‌তি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার আশঙ্কায় বাড়তি পুলিশ বাহিনী আসে। কোনও রকমে মৃতার স্বামী-শাশুড়িকে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতা‌লে পাঠানো হয়।

পরে মৃতার মা কল্পনা সাউ শ্রীরামপুর থানায় মেয়েকে খুনের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে খুন এবং বধূ নির্যাতনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন