প্রতীকী ছবি।
জঞ্জাল থেকে জৈব সার তৈরি করতে এ বার বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করবে হাওড়া পুরসভা। এ জন্য ৬৬টি ওয়ার্ডের প্রত্যেক বাড়ি পিছু দু’টি করে ডাস্টবিন দেওয়া হবে। সবুজ ও নীল— এই দু’রঙের ডাস্টবিনে নাগরিকদেরই আলাদা করে ফেলতে হবে বাড়ির আর্বজনা। পরে ব্যাটারিচালিত গাড়ি করে তা তুলে নিয়ে যাবেন পুরসভার সাফাই কর্মীরা। সবুজ ডাস্টবিনে ফেলতে হবে জৈব বা পচনশীল আবর্জনা এবং নীল ডাস্টবিনে ফেলতে হবে অজৈব আবর্জনা। পুরসভা সূত্রে খবর, প্রাথমিক ভাবে ২৮ ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড দু’টিকে মডেল করে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হচ্ছে। পরে সব ওয়ার্ডেই এ ভাবে আবর্জনা সংগ্রহের জন্য ডাস্টবিন দেওয়া হবে।
হাওড়া পুরসভার ভাগাড়ের জঞ্জাল থেকে জৈব সার তৈরির পরিকল্পনা দীর্ঘ দিনের। বাম পুরবোর্ডের সময়ে চেষ্টা শুরু হলেও তৃণমূল আমলেও তা কার্যকর হয়নি। উল্টো দিকে, বিকল্প ভাগাড়ের ব্যবস্থা না হওয়ায় বর্তমানে বেলগাছিয়া ভাগাড় পাহাড়ের চেহারা নিয়েছে। যে কোনও দিন ভেঙে পড়ে ওই ভাগাড় স্থানীয় জনজীবন বিপর্যস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা। হাওড়া পুরসভার জঞ্জাল অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ গৌতম চৌধুরী জানিয়েছেন, সমস্যা কিছুটা কমাতে বতর্মান তৃণমূল পুরবোর্ড কেন্দ্রীয় সরকারের স্বচ্ছ ভারত প্রকল্পের টাকায় প্রত্যেক বাড়ি থেকে আবর্জনা সংগ্রহ করে তা থেকে জৈব সার তৈরির পরিকল্পনা করেছে। তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, মেয়র রথীন চক্রবর্তীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ড ও আমার ১১ নম্বর ওয়ার্ডে পরীক্ষামূলক ভাবে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে। সফল হলে আগামী দিনে ৬৬টি ওয়ার্ডেই এই কাজ শুরু হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, ইতিমধ্যে চারটি জায়গায় কমপ্যাক্টর স্টেশন করা হয়েছে। বসানো হয়েছে ১১টি মেশিন। শীঘ্রই আরও ন’টি স্টেশনে ২২টি মেশিন বসানো হবে। এর মধ্যে রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেন ও সীতানাথ বোস লেনে জৈব সার তৈরির করার কাজ শুরু হবে। ২৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জৈব আবর্জনা তুলে রাউন্ড ট্যাঙ্ক লেনে জমা করা হবে। ১১ নম্বর ওয়ার্ডের জৈব আবর্জনা জমা করা হবে সীতানাথ বোস লেনের স্টেশনে। প্রাথমিক ভাবে এই দু’জায়গাতেই জৈব সার তৈরির কাজ হবে। পরে আরও জৈব সার তৈরির স্টেশন তৈরি করা হবে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত হয়েছে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের ২১৫৫টি বাড়িতে ও ১১ নম্বর ওয়ার্ডের ৩৬৭৭টি বাড়িতে দু’টি করে ডাস্টবিন খুব শীঘ্রই পৌঁছে দেওয়া হবে।
জৈব আবর্জনা তোলার জন্য এই দু’টি ওয়ার্ডে রাখা হবে পাঁচটি করে ব্যাটারি চালিত ই-রিকশা। সেই ই-রিকশা করে জৈব আবর্জনা পৌঁছে যাবে সার তৈরির স্টেশনে। এ ছাড়া অজৈব আবর্জনা, যেমন প্লাস্টিক বা কাচের বোতলের মত জিনিস নিয়মিত তোলার জন্য কাগজকুড়ানিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে পুরসভা। এই সব জিনিস তাঁদের কাছেই বিক্রি করা হবে।