প্রতীকী চিত্র।
সৎকার সেরে বাড়ি ফেরার পথে শনিবার রাতে গুলিতে জখম হয়েছিলেন বৈদ্যবাটির কামারপাড়ার বাসিন্দা সুদন পাত্র। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ ছিল, পারিবারিক অশান্তির জেরে এই ঘটনা। তবে তদন্তে নেমে পুলিশ নিশ্চিত, পারিবারিক কোনও বিবাদ নয়। জমির দালালি নিয়ে গোলমালের জেরেই সুদনকে খুনের চেষ্টা করা হয়।
রবিবার রাতেই পুলিশ বৈদ্যবাটির রামমোহন সরণি থেকে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে। ধৃতরা হল বিদ্যুৎ সরকার, বাবুন ভট্টাচার্য, বিশ্বজিৎ সাঁতরা ওরফে বিচু, মঙ্গল প্রামাণিক এবং প্রবীর নিয়োগী ওরফে বাবলু। প্রত্যেকেই জমি দালালির সঙ্গে যুক্ত। পুলিশের দাবি, ধৃতেরা অপরাধ কবুল করেছে। শনিবার রাতে সুদনের সঙ্গে তারাও শ্মশানে ছিল। সকলেই মদ্যপান করে। সুদন শ্মশান থেকে বেরোতেই বিদ্যুৎ গুলি চালায়। তার আগে ধারালো কিছু দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়। সোমবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক ৫ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
পাঁজরের কাছে গুলি লেগেছিল সুদনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আপাতত তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রবিবার তাঁর অস্ত্রোপচার হলেও শরীর থেকে গুলি বের করা যায়নি।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, বৈদ্যবাটি স্টেশনের কাছে পরিত্যক্ত একটি কারখানা চত্বরের দখল নিয়ে সুদনের সঙ্গে কয়েক জনের বিরোধ চলছিল। প্রয়োজনে সরকারি দফতরের সঙ্গে যোগসাজশ করে কোনও বিতর্কিত জমির চরিত্র বদল করে দেওয়ার জন্যও সুদনের ‘নাম’ রয়েছে। সুদন যে এলাকায় থাকেন, সেখানে ফরওয়ার্ড ব্লকের দাপট। ওই দলের নেতাদের সুদন সাহায্য করতেন বলে অভিযোগ। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, ওই দলের এক নেতার হাত রয়েছে সুদনের মাথায়। এমন নানা কারণে প্রতিপক্ষরা সুদনের উপর ক্ষুব্ধ ছিলই। আর তার জেরে গুলি।
অবশ্য দলের সঙ্গে সুদন-যোগ মানতে চাননি স্থানীয় ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব। বৈদ্যবাটির বাসিন্দা দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সুদন কোনও দিন আমাদের দল করেনি। ওরকম লোকের সঙ্গে আমাদের কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক থাকে না।’’ উল্টে তাঁর দাবি, সুদন শাসক দলের মদতপুষ্ট।
শহর তৃণমূলের সভাপতি অজয়প্রতাপ সিংহ পাল্টা বলেন, ‘‘সুদন কাদের ছত্রচ্ছায়ায় আর কারা ওকে কাজে লাগান, তা বৈদ্যবাটির মানুষ জানেন। ওর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’