আজ সোমবার ধর্মঘটের দিনে হাওড়া, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুর থেকে হাওড়া এবং কলকাতাগামী সব দূরপাল্লার বাস চালানো হবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন বাস মালিকেরা। হাওড়া বাসস্ট্যান্ডে রবিবার দিনভর এর স্বপক্ষে মাইক প্রচারও চালিয়েছেন তাঁরা। পাশাপাশি চালক এবং কন্ডাক্টরেরাও জানিয়ে দিয়েছেন ধর্মঘটের ডাক উপেক্ষা করে বাস চালানো হবে। যাত্রীদের উদ্দেশে মাইক প্রচার চালিয়ছেন তাঁরাও।
নোট বাতিলকে কেন্দ্র করে যে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার প্রতিবাদে এ দিন রাজ্যে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বামফ্রন্ট। বাসমালিকদের বক্তব্য, নোট বাতিলের জেরে এমনিতে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। তার উপরে ধর্মঘট ডাকা হলে সেই দুর্ভোগ আরও বাড়বে বই কমবে না।
চার জেলায় প্রতিদিন গড়ে ৩০০টি দূরপাল্লার বাস চলাচল করে। অধিকাংশ মালিক যে সংগঠনের অধীন সেই ইন্টার অ্যান্ড ইন্ট্রা রিজিওন বাস অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সম্পাদক পল্লব মজুমদার বলেন, ‘‘ব্যাঙ্ক থেকে যথেষ্ট নগদ তোলা যাচ্ছে না। যতটা টাকা পাওয়া যাচ্ছে সেটা সম্বল করেই মানুষ তাঁর প্রয়োজন মেটাতে বিভিন্ন জায়গায় ছুটছেন। এই পরিস্থিতিতে বাস বন্ধ করে মানুষের উপরে মড়ার উপরে খাঁড়ার ঘা ফেলতে চাই না আমরা।’’
সংগঠনের রাজ্য কমিটির সদস্য প্রভাত পান বলেন, ‘‘ধর্মঘটের দিনে বাস চালানো হলে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা থাকেই। রাজ্য সরকার আশ্বাস দিয়েছে ক্ষয়ক্ষতি হলে তা পূরণ করে দেওয়া হবে। কিন্তু সেটা বড় কথা নয়, নোট বদলকে কেন্দ্র করে মানুষ যেভাবে বিপাকে পড়েছেন তাতে অন্য কোনওভাবে তাঁদের আরও বিপাকে ফেলা উচিত নয়।’’
মালিকদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন চালক এবং কন্ডাক্টরেরাও। এই সব চালক এবং কন্ডাক্টরেরা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের অনুমোদিত শ্রমিক সংগঠনের আইএনটিটিইউসি-র সদস্য। যেহেতু তৃণমূল নেতৃত্বাধীন সরকার ধর্মঘটের বিরোধী সেই কারণেই আইএনটিটিইউসি-র সদস্য চালক ও কন্ডাক্টরেরা দলের নীতি মেনে ধর্মঘটের দিনে বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করছে চার জেলার রাজনৈতিক মহল।
তবে শুধু রাজনৈতিক কারণেই যে তাঁরা ধর্মঘটের বিরোধিতা করছেন সে কথা মানতে চাননি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা। পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটাল থেকে দৈনিক ৭০টির মতো দূরপাল্লার বাস চলে। আইএনটিটিইউসি-র ঘাটাল ব্লকের সভাপতি তথা বাসচালক মেহের আলি খান বলেন, ‘‘পরিস্থিতি ভয়াবহ। ধরুন লাইন দিয়ে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুললেন কোনও ব্যক্তি। তারপরে সেই টাকা নিয়ে হয়তো তিনি কলকাতায় যাবেন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস কিনতে। এই অবস্থায় বাস বন্ধ করে তাঁর দুর্ভোগ আমরা আর বাড়াতে চাই না। রাজনীতি এখানে বড় কথা নয়।’’ ধর্মঘটের দিনে বাস চলাচল করবে এই ঘোষণা মালিকদের পাশাপাশি তাঁরাও মাইকের মাধ্যমে প্রচার করছেন বলে মেহের জানান।