ছেলের বন্ধু খুন, সাজা যাবজ্জীব‌ন

দুই বন্ধুর বচসা শুনে সে একটি ছুরি নিয়ে হাজির হয়। আচমকাই সুরজের গলায় ছুরি বসিয়ে দেয় রাধাকৃষ্ণ। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণ লুটিয়ে পড়ে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০৫
Share:

নিহত সুরজ। ফাইল চিত্র

ছেলের বন্ধুকে খুনের দায়ে এক প্রৌঢ়ের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আদালত। বৃহস্পতিবার হুগলির নগর ও দায়রা বিচারক চৈতালি চট্টোপাধ্যায় (দাস) বাঁশবেড়িয়ার সাহেববাগানের বাসিন্দা রাধাকৃষ্ণ সাউকে ওই সাজা শোনান।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের ঘটনাটি ঘটে ২০১৬ সালের ২২ এপ্রিল রাতে। নিহতের নাম সুরজ হরিজন। বছর সতেরোর ওই তরুণ বাঁশবেড়িয়ার কলবাজার এলাকায় থাকত। রাধাকৃষ্ণের ছেলে মঙ্কেশ্বর ছিল সুরজের বন্ধু। ওই দিন রাত ন’টা নাগাদ সাহেববাগানে ঝুলনিয়া সেতুর নীচে সুরজ এবং মঙ্কেশ্বর বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিল। সেই সময় কোনও একটি বিষয় নিয়ে সুরজের সঙ্গে মঙ্কেশ্বরের বচসা শুরু হয়। ঘটনাস্থলের কাছেই রাধাকৃষ্ণের বাড়ি। দুই বন্ধুর বচসা শুনে সে একটি ছুরি নিয়ে হাজির হয়। আচমকাই সুরজের গলায় ছুরি বসিয়ে দেয় রাধাকৃষ্ণ। রক্তাক্ত অবস্থায় ওই তরুণ লুটিয়ে পড়ে। চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরের দিন নিহতের দিদি পুনম কুমারী মগরা থানায় রাধাকৃষ্ণ এবং মঙ্কেশ্বরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্তে নামে পুলিশ। অভিযুক্ত বাবা-ছেলেকে গ্রেফতার করেন মামলার তদন্তকারী অফিসার সুন্দরগোপাল মুখোপাধ্যায়। পরে দু’জনই জামিন পায়। মামলার সরকারি আইনজীবী সুব্রত গুছাইত জানান, আদালতে শুনানিতে মোট ১০ জ‌নের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। তার মধ্যে অমিয় রায় এবং রবি চৌধুরী নামে দু’জন ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলে‌ন। তাঁরা দু’জনেই নিহতের বন্ধু। তাঁদের পাশাপাশি নিহতের দিদি পুনম, মা, বাবা এবং প্রতিবেশীরা সাক্ষ্য দেন। বুধবার রাধাকৃষ্ণকে দোষী সাব্যস্ত করেন বিচারক। ওই দিনই আদালত তাকে হেফাজতে নেয়। মঙ্কেশ্বর উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে বেকসুর খালাস হয়ে যান। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি রাধাকৃষ্ণকে তিন হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাস কারাবাসের নির্দেশ দেন বিচারক।

Advertisement

এ দিন আদালতে এসেছিলেন পুনম কুমারী। তিনি বলেন, ‘‘ছোটদের মধ্যে ঝগড়াঝাটি তো হতেই পারে। দুই বন্ধুর ঝগড়ায় অকারণে ঢুকে পড়ে লোকটা ভাইকে খুনই করে ফে‌লল। আদালত উপযুক্ত সাজাই দিয়েছে। কোনও দিন লোকটা যেন জেল থেকে বেরোতে না পারে, এটাই চেয়েছিলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন